সেদিনের সন্ধ্যা
পাঠকের চিঠি লিখেছেন
সৌমিত্র মণ্ডল, বালি - গোসাবা
সময়টা সন্ধা ছয়টা বা তার বেশি হবে। আমরা কয়েকজন মিলে ঝড় বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মোটামুটি পাড়ার সকলকে নিকটবর্তী স্কুলে নিয়ে এলাম। টানা দুই তিন ঘণ্টা পরিশ্রমের পর সবাই বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম।তাই একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। হঠাৎ বাবা এসে বল্ল বাবলু তার মা কে নিয়ে একা আসতে পারছে না।তোদের একটু যেতে হবে। বলা মাত্রই আমি ও সুব্রত বেরিয়ে পড়লাম ঠাকুমাকে আনতে। দাদাদের বাড়ি পৌঁছে তড়িঘড়ি করে ঠাকুমাকে কোলে তুলে উদ্ধশ্বাসে দৌড়লাম। ইতস্তত বিক্ষিপ্ত ভাবে পড়ে থাকা গাছ গুলির মধ্য দিয়ে ছুটতে ছুটতে একসময় পা গেল পিছলে। ওমনি ধপাস করে পড়ে গেলাম। ভয় হলো ঠাকুমার লাগেনি তো? আমি ঠাকুমাকে জিজ্ঞাসা করার আগে ঠাকুমা আমায় জিজ্ঞাসা করলো-বাবা তোর লাগেনি তো? আমি বললাম না। সাথে সাথে ঠাকুমাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম-ঠাকুমা তোমার তো লেগেছে? (যা আমি বেশ বুঝতে পেরে ছিলাম)। ঠাকুমা বল্ল- আমার তো যাওয়ার সময় হয়েছে। কিন্তু তোকে যে বাঁচাতে হবে সবার জন্য। আমি যে অসুস্থ তা ঠাকুমা জানেন। আমি নিজের দীর্ঘ দিনের অসুস্থতার কথা ভেবে কেঁদে ফেললাম। ঠাকুমাকে বুঝতে দিলাম না। তারপর আবারও ঠাকুমাকে নিয়ে চল্লাম স্কুলের দিকে। যখন স্কুলে পৌঁছালাম তখন সন্ধ্যা সাতটা । সমগ্ৰ রাত দুশ্চিন্তার প্রহর গুনে শেষে ঝড়ঝঞ্ঝা থেমে সকাল হল। সকলেই বাড়ি ফিরে গেলো একে একে। আমি ফিরলাম সবার শেষে।আমার আর ঠাকুমার কথা মনে রইলো না। অথচ আজ এই দুই দিন বাদে সেই আশি উদ্ধ বৃদ্ধা ঠাকুমা নিজে লাঠি থেরে থেরে আমায় দেখতে এলেন। আমায় দেখতে নাকি তার বড়ই ইচ্ছা হচ্ছিল। আমি কেমন আছি জানলেন। দীর্ঘক্ষণ কথা বলার পর সামান্য কিছু মুখে দীয়ে আবার চলেও গেলেন। রেখে গেলেন আমার জন্য অন্ত:রের অন্ত:স্থল থেকে হাজারো ভালোবাসা ও আশীর্বাদ। আর নিয়ে গেলেন আপনার, আমার সকলের থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা।
পাঠকের চিঠি লিখেছেন
সৌমিত্র মণ্ডল, বালি - গোসাবা
সময়টা সন্ধা ছয়টা বা তার বেশি হবে। আমরা কয়েকজন মিলে ঝড় বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মোটামুটি পাড়ার সকলকে নিকটবর্তী স্কুলে নিয়ে এলাম। টানা দুই তিন ঘণ্টা পরিশ্রমের পর সবাই বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম।তাই একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। হঠাৎ বাবা এসে বল্ল বাবলু তার মা কে নিয়ে একা আসতে পারছে না।তোদের একটু যেতে হবে। বলা মাত্রই আমি ও সুব্রত বেরিয়ে পড়লাম ঠাকুমাকে আনতে। দাদাদের বাড়ি পৌঁছে তড়িঘড়ি করে ঠাকুমাকে কোলে তুলে উদ্ধশ্বাসে দৌড়লাম। ইতস্তত বিক্ষিপ্ত ভাবে পড়ে থাকা গাছ গুলির মধ্য দিয়ে ছুটতে ছুটতে একসময় পা গেল পিছলে। ওমনি ধপাস করে পড়ে গেলাম। ভয় হলো ঠাকুমার লাগেনি তো? আমি ঠাকুমাকে জিজ্ঞাসা করার আগে ঠাকুমা আমায় জিজ্ঞাসা করলো-বাবা তোর লাগেনি তো? আমি বললাম না। সাথে সাথে ঠাকুমাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম-ঠাকুমা তোমার তো লেগেছে? (যা আমি বেশ বুঝতে পেরে ছিলাম)। ঠাকুমা বল্ল- আমার তো যাওয়ার সময় হয়েছে। কিন্তু তোকে যে বাঁচাতে হবে সবার জন্য। আমি যে অসুস্থ তা ঠাকুমা জানেন। আমি নিজের দীর্ঘ দিনের অসুস্থতার কথা ভেবে কেঁদে ফেললাম। ঠাকুমাকে বুঝতে দিলাম না। তারপর আবারও ঠাকুমাকে নিয়ে চল্লাম স্কুলের দিকে। যখন স্কুলে পৌঁছালাম তখন সন্ধ্যা সাতটা । সমগ্ৰ রাত দুশ্চিন্তার প্রহর গুনে শেষে ঝড়ঝঞ্ঝা থেমে সকাল হল। সকলেই বাড়ি ফিরে গেলো একে একে। আমি ফিরলাম সবার শেষে।আমার আর ঠাকুমার কথা মনে রইলো না। অথচ আজ এই দুই দিন বাদে সেই আশি উদ্ধ বৃদ্ধা ঠাকুমা নিজে লাঠি থেরে থেরে আমায় দেখতে এলেন। আমায় দেখতে নাকি তার বড়ই ইচ্ছা হচ্ছিল। আমি কেমন আছি জানলেন। দীর্ঘক্ষণ কথা বলার পর সামান্য কিছু মুখে দীয়ে আবার চলেও গেলেন। রেখে গেলেন আমার জন্য অন্ত:রের অন্ত:স্থল থেকে হাজারো ভালোবাসা ও আশীর্বাদ। আর নিয়ে গেলেন আপনার, আমার সকলের থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা।
0 Comments
Welcome