সুন্দরবনের ব্যাঘ্র বিধবা মহিলাদের পাসে রামকৃষ্ণ সেবা মিশন
প্রশান্ত সরকার | বাসন্তী | সোমবার - আমফানের ক্ষত চিহ্ন এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি সুন্দরবনের মানুষ। একের পরে এক তাড়া করে চলেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। জীবন সংগ্রামের লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে।সুন্দরবনের কিছু মানুষের এখনো দুবেলা দুমুঠো ভেট ভরে ভাতের জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। করোনা ভাইরাস ও লকডাউন এর জেরে গ্রামের মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। শহরে কাজে আসতে ও ভয় পাচ্ছেন করোনা ভাইরাসের কারণে । অন্যদিকে শহরে আসলে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় গ্রামের মানুষের। গ্রামে নেই সেই ভাবে কর্মসংস্থান তাই বাধ্য হয়ে বাঘের রাজ্যে চলে যেতে হয় মাছ কাঁকড়া ধরতে। বনকর্মীদের চোখের আড়ালে মাছ, কাঁকড়া ধরতে জঙ্গলের গভীর খাড়ির মধ্যে যেতে হয়। এই ভাবে বাঘের আক্রমণের শিকার হতে হয় সুন্দরবনের দারিদ্র পরিবারের অসহায় মানুষদের।
এদিন বাসন্তী ও গোসাবা ব্লকের এমনই ব্যাঘ্র বিধবা অসহায় পরিবারের মহিলাদের পাশে দাঁড়ালেন কলকাতার লেকটাউনের রামকৃষ্ণ সেবা মিশনের মহারাজ স্বামী হরি মায়ানন্দজী মহারাজ। গোসাবা ও বাসন্তী ব্লকের প্রায় ৩০০ পরিবারের ব্যাঘ্র বিধবা মহিলাদের হাতে শীতের কম্বল, শাড়ি, গামছা তুলে দিলেন। গোসাবার লাহিড়ীপুর গ্রামে ও বাসন্তীর রামকৃষ্ণ পাঠকেন্দ্রে এই শীতবস্ত্র ও শাড়ী বিতরণের আয়োজন করা করেন। আপাতত শীতের হাত থেকে কিছুটা হলেও এই পরিবারগুলি রক্ষা পেলেন। তবে মহারাজ জানিয়েছেন এই সমস্ত পরিবারের মহিলাদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বনির্ভর করে তোলার পরিকল্পনা নিচ্ছেন। বিভিন্ন হাতের কাজ শিখিয়ে উপার্জন করতে পারেন সেই সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে মহারাজ হরি মায়ানন্দজী। গোসাবা ও বাসন্তী ব্লকের ৩০০ ব্যাঘ্র বিধবা মহিলাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য শিক্ষক তপন মাইতি, সমাজসেবী সৌমিত্র মন্ডল ও আকুল বিশ্বাস সকলকে একত্রিত করেন। সুন্দরবনের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ঝড়খালী সবুজ বাহিনী ইতিমধ্যে ৩০ জন ব্রাঘ্র বিধবা মহিলাদের নিয়ে আচার তৈরীর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং সেই আচার ইতিমধ্যে লোকালয়ের বাজারগুলিতে বিক্রি শুরু হয়েছে। এরফলে ব্যাঘ্র বিধবা মহিলারা নতুন দিশা খুঁজে পাচ্ছেন। আগামী দিনে আরো অনেক পরিবার এই কাজের সাথে যুক্ত হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সবুজ বাহিনীর কর্মকর্তারা।
0 Comments
Welcome