জৈব চাষে উৎসাহ দিতে কৃষক সমাবেশ সুন্দরবনে
পলাশ তরফদার, বাসন্তী |প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক রাখতে, পরিবেশকে রক্ষা করতে সর্বোপরি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ রাখতে রাসায়নিক চাষের পরিবর্তে জৈব চাষেই আরও বেশি করে গুরুত্ব দিতে হবে। উৎপাদন কম হলেও যাতে চাষিরা এই জৈব চাষ থেকে বিমুখ না হন, পাশাপাশি কি করলে এই চাষের সাথে যুক্ত চাষিরা আরও বেশি করে উপকৃত হতে পারেন, সেই কারনে সুন্দরবনের কৃষকদের নিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হল বাসন্তীর জয়গোপালপুর গ্রাম বিকাশ কেন্দ্রে। এই সংস্থা ও সুস্থায়ী কৃষি পরিবারের যৌথ উদ্যোগে এই কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হল রবিবার। উপস্থিত ছিলেন, রাজ্যের প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রী তথা বর্তমান ভোকেশনাল এডুকেশন ফর স্কিল ডেভেলপমেন্টের চেয়ারপার্সন পূর্ণেন্দু বসু, রাজ্য সভার সাংসদ দোলা সেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিভাগের অধ্যাপক কৃষ্ণেন্দু আচার্য, গ্রাম বিকাশ কেন্দ্রের সম্পাদক বিশ্বজিৎ মহাকুড় সহ সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কৃষকরা।
সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তের বহু চাষি এই জয়গোপালপুর গ্রাম বিকাশকেন্দ্রের সংস্পর্শে এসে রাসায়নিক চাষ ছেড়ে জৈব চাষে নিযুক্ত হয়েছেন। তবে এই চাষ করতে গিয়ে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাঁদেরকে। এই চাষে উৎপাদন ব্যয় অনেক ক্ষেত্রেই বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলনের তুলনায়, ফলে রাসায়নিক চাষের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে চাষিদের উৎপাদিত ফসল উপযুক্ত বাজারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। এক্ষেত্রেও চাষিরা উৎপাদন বিমুখ হয়ে পড়ছেন। যারা জৈব চাষ করছেন এবং বাজারে তাঁদের দ্রব্য বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন, সেক্ষেত্রে অনেকেই তাঁদের কথা বিশ্বাস করছেন না। আদৌ তাঁদের উৎপাদিত ফসল জৈব পদ্ধতিতে হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। ফলে উৎসাহে ঘাটতি পড়ছে কৃষকদের। এই সব সমস্যার সমাধান নিয়েই মূলত এদিন সমাবেশে আলোচনা হয়। চাষিদের দাবি জৈব চাষের জন্য বাজার তৈরি করতে হবে। তাহলে সেই নির্দিষ্ট বাজারে ক্রেতারা আসবেন রাসায়নিক বর্জিত ফসল কিনতে। সরকারি উদ্যোগে সরাসরি ক্রেতারা যাতে চাষিদের কাছ থেকে ফসল কিনতে পারেন সেই উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাবও এদিন দেন কৃষকরা।পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “ সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার এই চাষিরা যে নিজেরাই এই জৈব চাষে উদ্যোগী হয়েছেন সেটা খুবই ভালো পদক্ষেপ। ওনাদের পাশে থেকে কিভাবে এই উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।সমাবেশের পাশাপাশি কৃষকদের জৈব চাষে উৎপাদিত ফসল নিয়ে জৈব হাট বসেছিল।এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ক্রপ ক্যালেন্ডারের (চাষ পঞ্জী) উদ্বোধন করা হয়।