স্বাধীনতা সংগ্রামী চারুচন্দ্র ভাণ্ডারী ও শহীদ মাতঙ্গিনী হাজরার জন্মদিন উদযাপন
বাইজিদ মণ্ডল, ডায়মন্ড হারবার
প্রতি বছরের মতো এবারও ডায়মন্ড হারবারের ঋষি অরবিন্দ উদ্যানে স্বাধীনতা সংগ্রামী চারুচন্দ্র ভাণ্ডারী এবং শহীদ মাতঙ্গিনী হাজরার জন্মদিন পালন করা হলো। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে ও বঙ্গীয় হেলে/হেলিয়া/চাষী কৈবর্ত-মাহিষ্য সমাজের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় শোভাযাত্রার মাধ্যমে। খাদি ভাণ্ডারের সামনে চারুচন্দ্র ভাণ্ডারীর আবক্ষ মূর্তিতে এবং শহীদ মাতঙ্গিনী হাজরার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয়। এর পর ঋষি অরবিন্দ উদ্যানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন, যারা উভয় স্বাধীনতা সংগ্রামীর জীবনের উপর আলোকপাত করেন।
আলোচনা সভার পৌরোহিত্য করেন অধ্যাপক মাধাই বৈদ্য। তিনি চারুচন্দ্র ভাণ্ডারী এবং মাতঙ্গিনী হাজরার কর্মজীবনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। তিনি উভয়ের দেশপ্রেম ও সংগ্রামী জীবনের উল্লেখ করেন, যা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
বিশিষ্ট আইনজীবী ও সমাজকর্মী তপনকান্তি মণ্ডল তাঁর বক্তব্যে চারুচন্দ্র ভাণ্ডারীর নিখাদ দেশপ্রেম এবং তাঁর বলিষ্ঠ রাজনৈতিক জীবনের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, চারুচন্দ্র ভাণ্ডারী দক্ষিণ ২৪ পরগণার ভূমিপুত্র, উচ্চশিক্ষিত এবং মহাত্মা গান্ধী ও আচার্য বিনোবা ভাবে-র ভাবশিষ্য ছিলেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম.এ. ও বি.এল. ডিগ্রী অর্জন করেন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৩০ সালে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের সময় তিনি কারাবরণ করেন। স্বাধীনতার পর তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রথম খাদ্যমন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সঞ্জয় গায়েন, নীলরতন মণ্ডল, প্রণব দাস, দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত সরদার। তাঁরা সবাই উভয় সংগ্রামীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং তাঁদের জীবনের আদর্শকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্মদিন পালন শুধু তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন নয়, বরং তাঁদের দেশপ্রেম এবং সংগ্রামের আদর্শকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটি উদ্যোগ। এই ধরনের অনুষ্ঠান নতুন প্রজন্মকে দেশের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।