মাছ চাষে স্বনির্ভর করতে তপশিলি সম্প্রদায়ের মানুষদের বিজ্ঞানসম্মত প্রশিক্ষণ

মাছ চাষে স্বনির্ভর করতে তপশিলি সম্প্রদায়ের মানুষদের বিজ্ঞানসম্মত প্রশিক্ষণ



প্রশান্ত সরকার: বাসন্তী

গোসাবা ব্লকের মসজিদবাটির রামকৃষ্ণপুর উপাসনা চ্যারিটেবল ট্রাস্টে ১৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে ৩০ জন তপশিলি জাতিভুক্ত গ্রামবাসীকে মাছ চাষের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদের অধীনস্থ কেন্দ্রীয় মৎস্য শিক্ষা সংস্থান। কর্মশালাটি চলবে আগামী ২১ অক্টোবর, সোমবার পর্যন্ত।কেন্দ্রটির প্রধান এবং প্রিন্সিপাল সায়েন্টিস্ট ডঃ তাপস কুমার ঘোষাল এবং প্রিন্সিপাল সায়েন্টিস্ট ডঃ পরিমল সরদার এই প্রশিক্ষণে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গ্রামবাসীদের হাতে-কলমে শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে কীভাবে পুকুরের জলের পিএইচ এবং অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করতে হয় এবং কীভাবে পুকুরের জল শোধন করে মাছ চাষের জন্য প্রস্তুত করতে হয়।মৎস্য বিজ্ঞানী ডঃ পরিমল সরদার বলেন, তপশিলি জাতিভুক্তদের মাছ চাষের মাধ্যমে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে প্রশিক্ষণ শেষে তাদের মাছের পোনা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের পুকুরের গভীরতা এবং জলের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে আরও সহযোগিতা করা হবে। আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে তাদের ওপর নজরদারি চালানো হবে এবং প্রয়োজনে আরও মাছের পোনা এবং খাদ্য বিনামূল্যে প্রদান করা হবে।


অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একজন তপন মাইতি, যিনি ইতিমধ্যেই মাছ চাষের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি শিখে লাভবান হয়েছেন। তিনি বলেন, “মাছ চাষে লাভবান হওয়ার জন্য বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অত্যন্ত জরুরি।” তপন মাইতি ও ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিনিধি সুজিত মন্ডল এই প্রশিক্ষণ রত দলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।মৎস্য বিজ্ঞানী পরিমল সরদার বলেন, “বাসন্তী ব্লক এবং ক্যানিং-১ ব্লক মাছ চাষের ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে এই এলাকার পুকুর মালিকরা অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হতে পারেন।” ডঃ সুমন মান্না প্রশিক্ষণ শিবিরে পুকুরের জল ও মাটির পরিচর্যা এবং জলের পিএইচ ও অক্সিজেনের পরিমাপের প্রশিক্ষণ দেন।এই ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা তপশিলি সম্প্রদায়ের মানুষদের আর্থিক স্বনির্ভরতা বৃদ্ধির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মাছ চাষের সঠিক পদ্ধতি রপ্ত করতে পারলে, এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে এবং তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন