ক্যানিং-১ ব্লকের মাতলা-১ অঞ্চলের প্রমিলা বাহিনীর ১০০ দিনের কাজে নিম চাষ
ক্যানিং-১ ব্লকের মাতলা -১ অঞ্চলের প্রমিলা বাহিনীর নিম চাষের শুভ সূচনা করছে যুগ্ম বিডিও জয়প্রকাশ মন্ডল,ডাব্লু ডি ও উমা দাস, পিএও পায়েল বারিক,মাতলা-১ পঞ্চায়েত সদস্য অহল্যা কয়াল, হারেন ঘড়ুই,ভিএলই কমলাকান্ত সাহা প্রমূখ।
বিশ্বজিৎ পাল|ক্যানিং|সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের ক্যানিং-১ ব্লকের মাতলা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ক্যানিং পুরাতন নৌকাঘাট রোড থেকে মাতলা ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ২ কিমি ১০০ দিনের কাজে প্রমিলা বাহিনী শুরু করল নিম চাষ।পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির ফল ও ফুল গাছ।প্রথম পর্যায়ে প্রমিলা বাহিনী ১৬০০ দেশী নিম গাছ এবং বিভিন্ন প্রজাতির ৫০০ ফল ও ৫০০ ফুল গাছের চাষ শুরু করল।এদিন ক্যানিং-১ যুগ্ম বিডিও জয়প্রকাশ মন্ডল নিম গাছ,ফল ও ফুল গাছ মাটিতে রোপন করে কাজের শুভ সূচনা করেন।এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডাব্লু ডি ও উমা দাস,পি এ ও পায়েল বারিক, মাতলা রেঞ্জ বনবিভাগের বনকর্মীরা, মাতলা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য হাড়ু ঘোড়ুই,অহল্যা কয়াল,ভি এল ই কমলাকান্ত সাহা প্রমুখ।অনুষ্ঠানে মহিলা ও সাধারন মানুষের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতন।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ও অনুপ্রেরণা রাজ্যজুড়ে যেভাবে উন্নয়নের কর্মযঞ্জ চলছে আর সেই কাজে অনুপ্রেরণা পেয়ে সামিল হল নিম চাষে মাতলা-১ অঞ্চলের প্রমিলা বাহিনী।দেশী নিম গাছ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার্থে এবং মানব সভ্যতার স্বাস্থ্যে কতটা উপকারি তা সকলের কাছে অজানা নয়।তবে সুন্দরবনে প্রত্যন্ত এলাকায় নিম বিষয়ে আরও বেশী করে সচেতন করে তুলতে প্রমীলা বাহিনী এই অভিনব উদ্যোগ।নিম একটি ঔষধি গাছ যার ডাল, পাতা, রস, সবই কাজে লাগে। নিম বহু বর্ষজীবি ও চির হরিত বৃক্ষ। আকৃতিতে ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। এর কান্ড ২০-৩০ ইঞ্চি ব্যাস হতে পারে। ডালের চারদিকে ১০-১২ ইঞ্চি যৌগিক পত্র জন্মে। পাতা কাস্তের মত বাকানো থাকে এবং পাতায় ১০-১৭ টি করে কিনারা খাঁজকাটা পত্রক থাকে। পাতা ২.৫-৪ ইঞ্চি লম্বা হয়। নিম গাছে এক ধরনের ফল হয়। আঙুরের মতো দেখতে এ ফলের একটিই বিচি থাকে। জুন-জুলাইতে ফল পাকে, ফল তেতো স্বাদের।ভারতের এবং এই রাজ্যে প্রায় সবত্রই নিম গাছ জন্মে। প্রাপ্ত বয়স্ক হতে সময় লাগে ১০ বছর। নিম গাছ সাধারণত মাটির পিওএই ৬.২-৮.৫ এবং বৃষ্টিপাত ১৮-৪৬ ইঞ্চি ও ১২০ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রা নিম গাছের জন্য উপযোগী। নিমের পাতা থেকে প্রসাধনীও তৈরি হচ্ছে। কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকর।নিমের কাঠ খুবই শক্ত। এ কাঠে কখনো ঘুণ ধরে না। পোকা বাসা বাঁধে না। উইপোকা খেতে পারে না। এ কারণে নিম কাঠের আসবাবপত্রও তৈরি করা হচ্ছে।প্রাচীনকাল থেকেই বাদ্যযন্ত্র বানানোর জন্য নিম কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। নিমের এই গুনাগুনের কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষনা করেছে।এদিনের অনুষ্ঠানে ক্যানিং-১ যুগ্ম বিডিও জয়প্রকাশ মন্ডল বলেন মাতলা-১ অঞ্চলের ক্যানিং পুরাতন নৌকাঘাট রোড থেকে মাতলা ব্রীজ পর্যন্ত ১৬০০ নিম গাছ এবং ফল ও ফুল গাছ রোপন করা হচ্ছে ১০০ দিনের কাজে।বিভাগীয় দফতরের উদ্যোগে কাজের শুভ সূচনা করা হল।নিম মানব সভ্যতার এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে বিশাল উপকারি।এই ব্লক জুড়ে নিম গাছ রোপন করা হবে এবং নিমের উপকারিতা বিষয়ে মানুষজনকে সচেতন করে তোলা হবে।তিনি আরও বলেন গাছের পাট্রা যাতে বেনিফিসারিরা পায় সে বিষয়ে বিভাগীয় দফতরে আলোচনা করা হবে।যাতে এই অঞ্চলের মহিলারা আরও বেশী করে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারে।