বাসন্তীতে উদ্ধার হলো কুমির

 বাসন্তীতে উদ্ধার হলো কুমির

নুরসেলিম লস্কর, বাসন্তী : দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ভাঙ্গনখালি থেকে উদ্ধার হল একটি কুমির। সোমবার সকালে ভাঙ্গনখালি পাশ্বস্ত মাতলা নদীতে এক মৎস্যজীবির জালে ধরা পড়ে কুমিরটি। পৃথিবীর বৃহত্তম বদাবন সুন্দরবনের বসবাসকারী অধিকাংশ সাধারণ মানুষ তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে নদীতে মাছ,কাঁকড়া,মধু সংগ্রহ করে। তেমনই এদিন বাসন্তী ব্লকের ভাঙ্গনখালি গ্রামের বাসিন্দা বছর ত্রিশের আলামিন মোল্লা প্রত্যেক দিনের ন্যায় এদিনও মাতলা নদীতে জাল পাতে, মাছ ধরার জন্য। তারপর যখন ঐ জাল তুলতে যায় আলামিন তখন হঠাৎ করে জালে বিশাল টান পড়তে শুরু করে। আর জালে টান পড়তে আলামিন ভাবে উপরওয়ালা হয়তো তার দিকে মুখ তুলে চেয়েছেন। কোন বড় মাছ হয়তো তার জালে পড়েছে। কিন্তু জাল ডাঙ্গায় তুলতে চোখ কপালে ওঠে তার। মাছ নয় তার জালে পড়েছে আস্ত একটি কুমির। আর কুমিটিকে দেখার পর প্রথমে ভয় সন্তুষ্ট অবস্থায় কি করবে কিছু বুঝতে না পেরে কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়েছিল আলামিন। তারপর সাহস করে কুমিরটিকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নদীর পাড়ে নিয়ে আসে আলামিন। তারপর সে স্থানীয় বাসন্তী থানা এবং বনদপ্তরকে খবর দেয়।

     


 

ততক্ষণে এই খবর জানাজানি হতেই ভাঙ্গনখালির মাতলা নদীর পাড়ে জমতে থাকে সাধারণ মানুষের ভিড়। তারপর বাসন্তী থানার এসআই সত্যজিৎ রায়ের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পৌঁচ্ছায় বাসন্তী থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। সঙ্গে আসেন ঝড়খালীর মাতলা রেঞ্জের দুইজন বন কর্মী। তারপর সেখান থেকে ওই বন কর্মীদের সাহায্যে কুমিটিকে উদ্ধার করে ঝড়খালি ফরেস্ট অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। আর এই ঘটনার পর থেকে ঐ এলাকার মৎসজীবিরা থেকে শুরু করে নদীর ধারে বসবাসকারী সাধারণ মানুষদের মধ্যে যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কারণ এতো দিন শুধু কথায় বলতো সুন্দরবনের মানুষ জলে কুমির আর ডাঙ্গায় বাঘের সঙ্গে লড়াই করে বসবাস করে। আর এদিন সেই প্রচলিত কথাটাই যেন সত্যি হয়ে যাচ্ছে তাদের কাছে।

     


 

আর এদিন কুমিরটি কে উদ্ধার করতে আসা ঝড়খালি মাতলা রেঞ্জের বনকর্মী লক্ষণ বিশ্বাস বলেন, ” কুমিরটিকে নিয়ে এখন আমরা ঝড়খালির মাতলা ফরেস্ট অফিসে যাবো। তারপর সেখানে কুমিরটির শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সুস্থ থাকলে তাকে আবার সুন্দরবনের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে”। আর কমিরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা মৎস্যজীবি আলামিন মোল্লা বললেন , ” আমি প্রথমে ভেবেছিলাম বড়ো কোন মাছ হয়তো আমার জালে পড়েছে কিন্তূ জাল তুলতে দেখলাম কুমির প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম কুমির দেখে তার পর আবার সাহস করে কুমিরটিকে ধরে নদীর পাড়ে নিয়ে আসি। পরে পুলিশ ও বনকর্মীরা এসে নিয়ে যায় কুমিরটিকে। তবে আমরা এখন সবাই খুব ভয়ের মধ্যে রয়েছি কারণ আমরা নদীতে মাছ ধরে সংসার চালায় আর এই ঘটনার পর নদীতে নামতে ভয় লাগছে। যদি এর থেকে বড়ো কুমিরও এদিকে চলে আসে তখন কি হবে? এই ভয়ে আমরা এখন খুবই ভয়ে এবং চিন্তার মধ্যে রয়েছি। কারণ মাছ না ধরলে আমাদের সংসার চলে না, ওটাই আমাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র রাস্তা “।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন