প্রয়াত ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষ। মহকুমাজুড়ে শোকের ছায়া !

প্রয়াত ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষ। মহকুমাজুড়ে শোকের ছায়া !


নুরসেলিম লস্কর, ক্যানিং : শনিবার সকালে নিভে গেল এক সদা হাস্যময় মুখ। দীর্ঘদিন ধরে প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত জীবনযুদ্ধে পরাজিত হলেন ক্যানিং থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি সৌগত ঘোষ। মুম্বাইয়ের টাটা ক্যান্সার হসপিটালে চলছিল তাঁর চিকিৎসা। আর এই চিকিৎসার ফাঁকে মাঝেমধ্যেই ক্যানিং থানায় এসে দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। কোন্নগরের বাড়িতেই থেকেও কাজের প্রতি তাঁর একাগ্রতা ছিল প্রশংসনীয়।

তবে শনিবার সকালে চিকিৎসকদের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে প্রয়াত হন সৌগতবাবু। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্যানিং মহকুমাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সহকর্মী থেকে স্থানীয় মানুষ—সকলেই স্মরণ করছেন এক স্নেহময়, বন্ধুভাবাপন্ন পুলিশ আধিকারিককে। তিনি ক্যানিং থানার দায়িত্বে থাকলেও বাসন্তী, গোসাবা, জীবনতলা সহ গোটা ক্যানিং মহকুমাতেই সৌগত ঘোষের পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা ছিল বিস্তর। ছোট থেকে বড়, সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি—সবার সঙ্গেই সহজভাবে মিশে যেতেন তিনি।এক সহকর্মী বলেন, “সৌগতবাবু শুধু একজন অফিসার ছিলেন না, তিনি ছিলেন আমাদের পরিবারের মানুষ আমাদের অভিভাবক।”

আর তাঁর অকাল প্রয়াণে ক্যানিং থানাসহ সমগ্র সুন্দরবন অঞ্চলে নেমে এসেছে গভীর শোকের আবহ।  ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক সৌগত বাবুর এই অকাল প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে বলেন, " দীর্ঘদিন একসাথে কাজের স্মৃতি গুলো আজ গভীরভাবে মনে পড়ছে — পূজার উদ্বোধন থেকে শুরু করে মাঠে ফুটবল খেলা, রক্তদান উৎসব, পিকনিক কিংবা চায়ের আড্ডা অথবা বস্ত্র বিতরণের মতো প্রতিটা মুহূর্তে ছিল তাঁর সান্নিধ্য। কঠিন সময়ে একসাথে আলোচনা করে পথ খুঁজেছি, মনোমালিন্য হলেও হাসিমুখে মিটিয়ে নিয়েছি। এমন মানুষ খুব কমই দেখা যায়। ঈশ্বর ভালো মানুষদের খুব বেশিদিন হয়তো পৃথিবী তে রাখেন না—তাই হয়তো তাড়াতাড়ি ডেকে নিলেন তাঁকে। ভগবান তাঁর আত্মাকে শান্তি দান করুক। ওঁনাকে আমরা গভীরভাবে মিস করবো।"  আর সহকর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয় বিধায়কের এই কথা গুলো থেকে মনে হয় স্পষ্ট প্রয়াত সৌগত বাবুর নিষ্ঠা, মানবিকতা ও হাসিমুখ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে ক্যানিংবাসীর হৃদয়ে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন