সুন্দরবনে শুরু হলো দাবি আদায়ের মেলা!
নুরসেলিম লস্কর, বাসন্তী : বুধবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে শুরু হলো সুন্দরবন কৃষ্টি মেলা ও লোকসংস্কৃতি উৎসব। কুলতলী মিলন তীর্থ সোসাইটির আয়োজিত এই মেলা এবারে ২৭ তম বর্ষে পদার্পন করলো। মেলা চলবে আগামী ২৯তারিখ পর্যন্ত।এদিন এই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাদু সম্রাট পি.সি সরকার সহ কলকাতা হাই-কোর্টের প্রাক্তন বিচার প্রতি সমবৃদ্ধ চক্রবর্তী, প্রাক্তন পুলিশ কর্তা অরিন্দম আচার্য সহ আরো বিশিষ্ট জনেরা।এবছর মেলা প্রাঙ্গনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন স্টলসহ রাজ্য সরকারের কয়েকটি স্টল থাকছে। এছাড়া নানা শিক্ষামূলক স্টল ও ভিন্ন স্বাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও থাকছে এই মেলায়। আর এবছর এই দাবি আদায়ের মেলার মূল দাবি, ক্যানিং থেকে ঝড়খালি পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের অসম্পূর্ণ কাজ শুরু করা এবং মাত্রা নদীর চরে কেন্দ্রীয় কৃষি বিদ্যালয় গড়ে তোলা ও ক্যানিং মহকুমা আদালত চালু করা। এ বিষয়ে উল্লেখ যে, এই মেলা বরাবরই সুন্দরবনের মানুষের দাবি আদায়ের মঞ্চ হয়ে থেকেছে। যার ফলশ্রুতি হিসাবে সুন্দরবনের বাসন্তীতে গড়ে উঠেছে সুকান্ত কলেজ থেকে শুরু করে বাসন্তী আইটিআই কলেজ। এছাড়াও সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক জুনিয়র হাই স্কুল ও প্রাইমারি স্কুল গড়ে উঠেছে। যেগুলির দাবি এই মেলা থেকেই একদিন উঠেছিল। তেমনি এই মেলা থেকে দাবি উঠেছিল ক্যানিং থেকে ঝড়খালি পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের। যা এখন থমকে আছে নানা ধরনের জটিলতার কারণে। যার কাজ অবিলম্বে শুরু করার পাশাপাশি সুন্দরবনের ছেলেমেয়েদের উচ্চ শিক্ষার সঙ্গে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে মাতলা নদীর চড়ে কেন্দ্রীয় কৃষি বিদ্যালয় তৈরির দাবিও উঠে আসছে এই মেলার মঞ্চ থেকে। এছাড়া ক্যানিং মহকুমায় কোন ফৌজদারী আদালত না থাকার কারণে এলাকার মানুষের আইনি সমস্যা সমাধানের জন্য আলিপুরে ছুড়তে হয়। তাই এবারে ক্যানিং মহকুমায় আদালত তৈরীর দাবি ও জোরালো ভাবে উঠে আসছে।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সমবৃদ্ধ চক্রবর্তী মেলার উদ্বোধন করেন। আর এই মেলার প্রধান উদ্যোক্তা তথা মেলা কমিটির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সমাজকর্মী লোকমান মোল্লা বলেন, ” সুন্দরবনবাসী সব সময় অবহেলিত,বঞ্চিত এবং সুন্দরবন কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ার ফলে এখানে কর্মসংস্থানেরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই যেমন কলকাতায় কর্মসংস্থানের জন্য যাতায়াতের জন্য সুন্দরবনে রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ অবিলম্বে শুরু করা দরকার এবং সেই সঙ্গে সুন্দরবনে কৃষি বিদ্যালয় ও গড়ে তোলা দরকার। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি অবিলম্বে সুন্দরবনবাসীকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিয়ে সরকারের উন্নয়নের জোয়ারে সুন্দরবনবাসীদের কেও সামিল করার জন্য । আর আগামী দিনে সুন্দর বনবাসীদের উক্ত দাবি গুলি পূরণ না হলে এই সুন্দরবন কৃষ্টি মেলার মঞ্চ থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। যেমন, রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ অবিলম্বে শুরু না হলে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে সরকারের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে মামলা করার হুঁশিয়ারিও দেন।