শুরু হল সুন্দরবনবাসীর দাবি আদায়ের মেলা
নুরসেলিম লস্কর, বাসন্তী : গণচেতনা, গণশিক্ষা, গণসংস্কৃতি,বিকাশ, শান্তি সম্প্রীতি ও স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার লক্ষ্যমাত্রা কে পাথেয় করে শান্তির বার্তা দিয়ে প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তীর কুলতলীতে শুরু হল 'সুন্দরবন কৃষ্টি মেলা ও লোকসংস্কৃতি উৎসব'। কুলতলী মিলনতীর্থ সোসাইটি'র উদ্যোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় দ্বারোদ্ঘাটন ও প্রদীপ প্রজ্জ্বোলনের মধ্য দিয়ে ২৮ তম বর্ষের মেলার আনুষ্ঠানিক ভাবে সূচনা করেন মহামান্য কলকাতা হাই-কোর্টের সদ্য প্রাক্তন, প্রধান বিচারপতি শ্রী দেবাশীষ কর গুপ্ত। আর এদিনের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারত সরকারের খনি মন্ত্রালয়ের আধিকারিক বর্ষা অশোক আগলায়ে, বস্ত্রালয় মন্ত্রালয়ের আধিকারিক সন্দীপ কুমার, ভারতীয় সেনাবাহিনীর আর.এম.ও. হেডকোয়াটার্স রিক্রুয়িটিং জোনের মেজর, শক্তি দাগর সহ ইন্ডিয়ান নেভির কামান্ডার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার স্বাথী ভাটিয়া, সুন্দরবন কৃষ্টি মেলা লোকসংস্কৃতি উৎসবের চেয়ারম্যান লোকমান মোল্লা সহ অন্যান্য বিশিষ্টরা। সুন্দরবনের নানান সমস্যা সহ বিভিন্ন দাবি দফা নিয়ে ১০ দিনের এই বৃহৎ মেলার মাঙ্গলিক উদ্বোধনী দিবস কে 'সুন্দরবন বিকাশ দিবস' নামে চিহ্নিত করার পাশাপাশি এই মেলার প্রত্যেকটি দিন কে এরকম 'স্বাস্থ মেলা', 'জব মেলা','মহিলা মৎস্যচাষী দিবস', 'জাতীয় কৃষক দিবস 'সহ 'এডুকেশন কনক্লেভ', নামে নামকরণ করা হয়েছে। সুন্দরবনের উন্নয়ন এবং চাওয়া পাওয়া এই নামকরণের এর মাধ্যমে মেলা উদ্যোক্তারা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টার কসুর করতে খামতি রাখেন নি।
এই মেলা চলবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।মেলার কমিটির সভাপতি লোকমান মোল্লা জানান, মেলায় প্রতিদিন থাকছে বিভিন্ন ধরনের উচ্চমানের সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান, সেই সাথে থাকছে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপালা ও ১০ দিন ব্যাপি আঁধার সেবা ক্যাম্প থাকছে, যা এই প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকায় এক অভিনব প্রয়াস। মেলায় রয়েছে রাজ্য সরকারের ৬টি ষ্টল, কেন্দ্র সরকারের ৪০ টি বিভিন্ন ধরনের ষ্টল ছাড়াও অন্যান্য ২৫০ টি নানান ধরনের ষ্টল রয়েছে মেলা প্রাঙ্গনে। এদিন এই মেলার মূল মঞ্চ ডঃ বি.আর.আম্বেদকর মঞ্চ থেকে দাবি তোলা হয় সুন্দরবনের ছাত্রছাত্রীদের জন্য মাতলা নদীর চরে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, অতি শীঘ্রই ক্যানিং টু ঝড়খালি রেললাইন সম্প্রসারন এবং সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম্য মায়েদের জন্য মাতৃসদন হাসপাতাল গড়ে তোলার। সব মিলিয়ে ১০ দিনের এই মেলা প্রত্যন্ত সুন্দরবনের মানুষের কাছে হয়ে উঠেছে দাবি আদায়ের এক অভিনব মিলন ক্ষেত্র।