সুন্দরবনে পালিত হলো 'রবীন্দ্র জয়ন্তী' উৎসব

সুন্দরবনে পালিত হলো 'রবীন্দ্র জয়ন্তী' উৎসব !


নুরসেলিম লস্কর, গোসাবা : আজ ৯ ই মে ২০২৫ শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে মহা সমারোহে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৫ তম জন্মদিবস পালিত হলো গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে। পরে নিকটবর্তী বেকোন বাংলো তে কবিগুরুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক ও মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নীলিমা মন্ডল, উপস্থিত ছিলেন দঃ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ অনিমেষ মন্ডল সহ গোসাবা ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিশ্বরুপ বিশ্বাস, সহ সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিধান মৃধা, পঞ্চায়েত সমিতির সকল সদস্য/ সদস্যা ও কর্মাধ্যক্ষ গন সহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ ও স্কুলের ছাত্র ছাত্রী বৃন্দ। 
এরপর হ্যামিলটন বাংলো তে বর্নাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালিত হয়। কবিগুরুর জীবন ও চিন্তাধারার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নীলিমা মন্ডল বলেন,আমরা গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে দিনটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করার চেষ্টা করেছি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন দর্শন ও কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলি,
রবীন্দ্র জয়ন্তী শুধু একটি উদযাপন নয়, এটি একটি শিক্ষণীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক উৎসব। তাঁর জীবন এবং কাজ থেকে আমরা মানবপ্রেম, দেশপ্রেম, এবং সংস্কৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসার শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। তাঁর সৃষ্টিশীলতা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা আমাদের নতুনভাবে চিন্তা করতে এবং নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে উৎসাহিত করে। তিনি আরো বলেন,১৯৩২ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর কবিগুরু শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে ক্যানিং এ নামেন, রেল কর্তৃপক্ষ তাঁর জন্য বিশেষ কোচের ব্যবস্থা করে ছিলেন। ট্রেন যখন ক্যানিং এ পৌঁছায় তখন সূর্য অস্ত গেছে। ঐ রাত টা কবি পোর্ট ক্যানিং এর অতিথি নিবাসে কাটিয়েছিলেন।


পর দিন হাজার হাজার মানুষের কলধ্বনি ও পুষ্প বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে জেটিঘাটে পৌঁছান। তারপর মাতলা, পুরন্দর,বিদ্যাধরী নদী পেরিয়ে গোসাবায় এসেছিলেন। কবি উঠলেন বেকন বাংলোয়।  
পরদিন ড্যানিয়েল বাংলোর সামনে আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় কবিগুরু বলেছিলেন, আমার বন্ধু স্যার ড্যানিয়েল হ্যামিল্টন বহু দূরের দেশ থেকে এসেছেন। কিন্তু এই এলাকার মানুষের প্রতি তাঁর অগাধ ভালাবাসা। তাই তিনি আমাদের দেশের মানুষ কে আপন করে নিতে পেরেছেন। এভাবেই প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মিলন সম্ভব।  
ড্যানিয়েল হ্যামিল্টন সাহেব কবিকে উপহার দিয়ে ছিলেন একটি পশমের শাল। শালটি তৈরি করে ছিল গোসাবার তাঁত বয়ন কেন্দ্রের ছাত্ররা। এই ভাবে দুদিন তিনি কাটিয়ে ছিলেন।  
নববর্ষের সকালে গোসাবা ঘাটে লঞ্চে ওঠার মুখে কবি বলেছিলেন,... স্বদেশী সমাজের যে স্বপ্ন আমি দেখেছিলাম, এখানে তার পরিপূর্ণ রূপ দেখে মুগ্ধ হলাম। সমস্ত ভারতবর্ষের আদর্শ হোক গোসাবা। সেই কবিগুরুর আশীর্বাদ ধন্য আমরা যারা গোসাবা ব্লকে জন্ম গ্রহণ করেছি। তাঁর আশীর্বাদ কে পাথেয় করে আমরা জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে এলাকার উন্নয়নে সামিল হয়ে আমাদের ব্লক কে এগিয়ে নিয়ে যাবো আসুন সবাই মিলে আজকের এই পবিত্র দিনে শপথ করি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন