চোখের সামনে বাঘে তুলে নিয়ে গেলো কুবিরকে কিছুই করতে পারিনি- সঙ্গী পিন্টু।

চোখের সামনে বাঘে তুলে নিয়ে গেলো কুবিরকে কিছুই করতে পারিনি- সঙ্গী পিন্টু।



নিজস্ব প্রতিনিধি , ঝড়খালী, ১৩ ফেব্রুয়ারি ঃ চোখের জল ছাড়া আর কিছু নেই। দিন কাটে মাছ কাঁকড়া ধরে, অভাবের সংসার। নুন আনতে পানতা ফুরাই কুবিরের পরিবারের। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বাসন্তী ব্লকের ঝড়খালী অঞ্চলের ঝড়খালী  ৩ নং গ্রামের বাসিন্দা কুবির রায় (৪২)গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মাকে প্রনাম করে বনবিবির নাম নিয়ে সঙ্গীদের নিয়ে গ্রামের ঘাট থেকে নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পরেছিল জীবন সংগ্রামের লড়াইয়ে। সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের গাজীখালী খাড়িতে কাঁকড়া ধরতে। কুবির রায় তার চার সঙ্গী - সমার মণ্ডল, পিন্টু মণ্ডল,নারান মণ্ডল, প্রশান্ত সরকার। খাড়িতে রাত টুকু কাটালো। ১৩ ফেব্রুয়ারি তখনো সকাল হয়নি জোয়ার লেগেছে নদীতে তাই ভোরের আলোই চলছে প্রস্তুতি গাজীখালীর খাড়িতে কাঁকড়া ধড়ার জন্য। কুবির রায় নৌকার মাথায় বসে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আর ঠিক সেই সময় পেছন থেকে বাঘ এসে লাফিয়ে পরে কুবিরের গায়ের উপর। সঙ্গীদের পিছু ফিরতে ফিরতে কুবিরকে নৌকা থেকে টেনে নামিয়ে নিয়ে জঙ্গলে চলে যায় বাঘ। চোখের সামনে সেই দৃশ্য দেখলো সঙ্গীরা কিন্তু কিছুই করতে পারিনি। সঙ্গী হারানোর বেদনা নিয়ে গ্রামের ঘাটে ফিরে এলেন কুবিরের সঙ্গীরা নৌকা নিয়ে।

কুবিবের বাড়িতে সংবাদ গেলে কান্নায় ভেঙে পরেন স্ত্রী কবিতা রায়। 
কুবিরের তিন ছেলে মেয়ে- বড় মেয়ে বর্ষা রায় ১৩ বছর বয়স, মেজ ছেলে জীৎ রায় ১১ বছর বয়স শয্যাশায়ী প্রতিবন্ধী, ছোট ছেলে শুভজীৎ রায় ২ মাস বয়স। সংসারের সমস্ত খরজ চলতো কুবিরের রোজগারে। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা বাবা হারানোর শোকে ভেঙে পরেছে।

রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে বাঘে খাওয়া পরিবার ও গ্রাম গুলিকে দত্তক নিয়েছেন কিন্তু এখনো তাদের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি , দ্রুত চলছে তাদের জন্য প্রস্তুতির কাজ । এই পরিবারটি যাতে সমস্ত সুযোগ সুবিধে পায় এবং দত্তক নেওয়া পরিবারের তালিকাভুক্ত করার আশ্বাস দেন ঝড়খালী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ মণ্ডল। বন বিভাগের পক্ষ থেকে চলছে বাঘ গননার কাজ। সমস্ত বিপদজনক খাড়ি গুলির চত্তরে বাইরে বনবিভাগের কড়া নজরদারী থাকার সত্ত্বেও কি ভাবে ঢুকলো কুবিররা ঐ খাড়িতে থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন।



দেখুন ভিডিও click here

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন