ক্যানিং দাঁড়িয়ায় নিজের বিয়ে নিজেই বন্ধ করল সহ পাঠিনীদের সহযোগিতায়, মুচলেখা নিয়ে বিয়ে বন্ধ করল পুলিশ ও চাইল্ড লাইন।
ক্যানিং পশ্চিম দাঁড়িয়া গ্রামে পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের সদস্যরা মুচলেকা নিয়ে নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করছে।ছবি নিজস্ব চিত্র।
নিজস্ব প্রতিনিধি|বৃহস্পতিরবার দুপুরে ছিল নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ের লগ্ন।আর এই বিয়ে বন্ধ করতে নাবালিকা ছাত্রী নিজে ও তার কয়েক জন সহ পাঠিনীদের সঙ্গে নিয়ে চাইল্ড লাইনে খবর দেয়।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের সদস্যরা এসে মুচলেকা নিয়ে নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করে দেয়।ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের ক্যানিং -১ ব্লকের দাঁড়িয়া পঞ্চায়েতের পশ্চিম দাঁড়িয়া গ্রামে।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে পশ্চিম দাঁড়িয়া গ্রামে বাসিন্দা নাবালিকা ছাত্রী যমুনা লক্ষ্মী হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণিতে কলা বিভাগে পঠন পাঠন করে।১৭ বছর হল তার বাবা মারা গেছে।মা লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিচালিকার কাজ করে কোন মতে সংসার চালায়।নাবালিকা ছাত্রী দুই বোন।সে ছোট।দিদির বিয়ে হয়ে গেছে।মামা বাড়িতে তারা থেকে নাবালিকা পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে।আর নিজে পড়াশুনা শিখে শিক্ষার আলো পেয়ে নাবালিকা অপর কে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে চায়।এ দিকে নাবালিকা ছাত্রীর মা ও মামা বাড়ির সদস্যরা নিকাড়ীঘাটার সাতমুখী গ্রামে এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে নাবালিকা ছাত্রীর সঙ্গে।ছেলে একটি গ্রীল কারখানায় কাজ করে।কিন্তু নাবালিকা ছাত্রী সে বিয়ে করতে চায় না সে আরও পড়াশুনা করতে চায়।তাই নাবালিকা ছাত্রী স্কুলে এসে তার ক্লাসের সহ পাঠিনীদের সব কিছু খুলে বলে।তারা সব কিছু শুনে চাইল্ড লাইনে খবর দেয়।এমনকি নাবালিকা ছাত্রী নিজেও চাইল্ড লাইন সব কিছু খুলে বলে।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ক্যানিং থানার এস আই সামায়ন বাসার নেতৃত্ব পুলিশবাহিনী ও ক্যানিং চাইল্ড লাইনের সদস্য বান্টি মুখার্জী নেতৃত্বে চাইল্ড লাইনের সদস্যরা।তারা অভিযান চালিয়ে নাবালিকা ছাত্রীর মায়ের মুচলেকা নিয়ে নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করে দেয়।পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের সদস্যরা নাবালিকা ছাত্রীর বয়সের প্রমাণপত্র দেখে নাবালিকা ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে সুজিয়ে আলোচনার মাধ্যমে মুচলেকা নিয়ে নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করে দেয়।নাবালিকা ছাত্রী বলেন আমি এখন বিয়ে করতে চায় না।আমি পড়াশুনা করতে চায়।আমি শিক্ষার আলো পেয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আমার মায়ের পাশে দাঁড়াতে চাই।যাতে আমার মায়ের আর লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিচালিকার কাজ আর করতে না হয়।আমি এবং আমার ক্লাসের সহ পাঠিনীরা চাইল্ড লাইনে খবর দিই।বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখেছি নাবালক নাবালিকা বিয়ে দেওয়া আইনত অপরাধ।এদিকে আন্তজার্তিক নারী দিবসে এমন ধরনের ঘটনায় নাবালিকা ছাত্রী ও সহ পাঠিনীদের সাহসী কতার জন্য সাধুবাদ জানায় ক্যানিং মহকুমা বুদ্ধিজীবী মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষজন।পুলিশ ও চাইল্ড লাইন জানান খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে মুচলেকা নিয়ে এক নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।তবে এ বিষয়ে সাধারণ মানুষজনকে সচেতন করে তোলা হচ্ছে।