ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে ১০০ দিনের কাজে রোপন হচ্ছে গোলপাতা, সুন্দরী, কাঁকড়া, বাইন।

ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে ১০০ দিনের কাজে রোপন হচ্ছে গোলপাতা, সুন্দরী, কাঁকড়া, বাইন।



নিজস্ব প্রতিনিধি|ক্যানিং|দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের ক্যানিং-১ ব্লকের ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে ক্যানিং-১ বিডিও নীলাদ্রি শেখর দে উদ্যোগে মহত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীন কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পের ১০০ দিনের কাজে জব কার্ডের মহিলা বেনিফিসারিরা কেরলের মডেলে নারকেল গাছের চারা রোপনের পাশাপাশি ম্যানগ্রোভ গাছের চারা রোপনের কাজ শুরু করল।ইতিমধ্যে জব কার্ডের মহিলা বেনিফিসারিরা ক্যানিং পুরাতন নৌকাঘাট রোডের এবং ক্যানিং এস ডি ও রোডের ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে ম্যানগ্রোভ গাছের চারা রোপনের কাজ শুরু করল।নদীর ভূমি ক্ষয় রোধে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে ও সুন্দরবনের পযটকদের আর্কষন বাড়তে এই অভিনব উদ্যোগ জব কার্ডের মহিলা  বেনিফিসারিদের।ইতিমধ্যে জব কার্ডের বেনিফিসারিরা গোলপাতা,সুন্দরী, কাঁকড়া, বাইন গাছের চারা নদীর পাড়ে রোপনের কাজ শুরু করছে।তবে এই সমস্ত জব কার্ডের মহিলারা এস এইচ জি গ্রুপ করছে চলতি বছরে জুলাই মাসে।আর এই মহিলাদের গ্রুপের নাম মাতলা 'বৃক্ষ বন্দনা' এস এইচ জি।১১ জন মহিলা মিলে এই এস এইচ জি গ্রুপটি করে।আর এরা সকলেই এম জি এন আর ই জি এ ওয়ারকার।মাতলা বৃক্ষ বন্দনা এস এইচ জি গ্রুপের সভানেত্রী মলিনা হালদার, সম্পাদিকা কাকলী পাল, কোষাধ্যক্ষা শর্বানী পাল বোস।এই মাতলা বৃক্ষ বন্দনা এস এইচ জি গ্রুপের সমস্ত মহিলারা যারা ১০০ দিনের কাজে ওয়ারকার তারা চলতি বছরে জুলাই মাস থেকে বৃক্ষ রোপনের কাজ শুরু করে।ক্যানিং পুরাতন নৌকাঘাট রোড থেকে মাতলা ব্রীজ পর্যন্ত এবং ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে কেরলের মডেলে নারকেল গাছের চারা রোপন করে শুধু বাংলা নয় দেশের মধ্যে এক নজির গড়েছে প্রায় ১৩ ঘন্টা কাজের শ্রম দিয়ে।প্রায় ৩৫২০ টি বৃক্ষ রোপন করে ফেলেছে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে।চারা গাছগুলি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য জব কার্ডের বেনিফিসারিরা চারিদিকে বাগানের পরিবেষ্ঠনী দিয়েছে বাঁশের খুঁটি, চটা এবং নেট জাল দিয়ে।তবে জব কার্ডের বেনিফিসারিরা ২ হাজার নিম গাছের চারা, ৫০০ টি নারকেল গাছের চারা, বিভিন্ন প্রজাতির ৪০০ টি ফল গাছের চারা, ২০০ টি করমচা গাছের চারা, ১৫০ টি জবা ফুল গাছের চারা, ২৫০ টি সুপারি গাছের চারা সহ মেহগনি, শিশু,কলা গাছের চারা রোপন করে।বর্তমানে জব কার্ডের বেনিফিসারিরা ইতিমধ্যে ১০০ টি সুন্দরী গাছের চারা, ৫০ টি কাঁকড়া, ৫০ টি বাইন সহ গোলপাতা গাছের চারা রোপন করেছে এবং দেখভাল করছে।সুন্দরবনে গোলপাতা দেখতে প্রায় নারকেল গাছের পাতার মতন।গোলপাতা জঙ্গলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার থাকতে খুব পছন্দ করে।বিভিন্ন চর্মরোগ ও পেটের অসুখের ঔষধ তৈরি তে গোলপাতা গাছের ব্যবহার আছে।এমনকি অ্যালকোহল ও ভিনিগার উৎপাদনে গোলপাতা গাছের ব্যবহার আছে।এই গাছের শুকনো পাতা ঘর ও নৌকার ছাউনি হিসাবে ব্যবহার হয়।ফলে ঘরের ভিতর ঠান্ডা থাকে।এদিকে মহিলাদের এই বৃক্ষ রোপনের কাজে রাজ্যের বিভাগীয় দফতরের আধিকারিকরা প্রায় সময় ভিজিট করে মহিলা জব কার্ডের বেনিফিসারিদের বৃক্ষ রোপনের বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে।রাজ্যের ম্যাঙ্গাজিনে প্রকাশিত হতে চলেছে ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে কেরলের মডেলে এই নারকেল গাছের চারা রোপনের কাজ।সম্প্রতি রাজ্যের বিভাগীয় দফতরের  ফটোগ্রাফাররা এসে এই বৃক্ষ রোপনের কাজের ছবি তুলে নিয়ে যায়।
ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে গোলপাতা গাছের চারা রোপন করছে জব কার্ডের মহিলা বেনিফিসারিরা।


আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুশির জোয়ারে ভেসে ওঠে ক্যানিংবাসী।জব কার্ডের মহিলা বেনিফিসারি মলিনা হালদার, কাকলী পাল, শর্বনী পাল বোস,মিনাক্ষী মন্ডল, লক্ষ্মী সরকার, লীলা বিশ্বাস, কবিতা মন্ডল, রানী বালা পাল, ভারতী নস্কর, ভাস্বতী সরদার বলেন ভূমি ক্ষয় রোধে, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে এবং সুন্দরবনের পযটকদের আর্কষন বাড়তে এবং কর্ম-সংস্থান গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই বৃক্ষ রোপনের কাজ চলছে।মোট ৩৫২০ টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপন করে দেখভাল করা হচ্ছে চারা গাছগুলিকে।ক্যানিং-১ বিডিও সাহেব নীলাদ্রি শেখর দে, ক্যানিং মহকুমা শাসক অদিতি চৌধারী, জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর সাহেব সব ধরনের সহযোগিতা করছে এই বৃক্ষ রোপনের কাজে।তারা আরও বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলেছেন ভালবেসে গাছ লাগান।তাই তার আদর্শে অনুপ্রেরণা হয়ে এই বৃক্ষ রোপনের কাজ করে চলেছি।মহত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীন কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পের  ১০০ দিনের কাজে জব কার্ডের মহিলা বেনিফিসারিরা  প্রায় ১৩ ঘন্টা পরিশ্রম করে এই বৃক্ষ রোপনের কাজ করা হচ্ছে।আমরা সকলেই মাতলা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জব কার্ড হোল্ডার।বর্তমানে ক্যানিং মাতলা নদীর পাড়ে ম্যানগ্রোভ গাছের চারা রোপনের কাজ করছি।বিশেষ করে সুন্দরী, গোলপাতা, কাঁকড়া,বাইন গাছের চারা রোপন করা হচ্ছে।এ দিকে এই অভিনব বৃক্ষ রোপনের কাজ শুধু রাজ্য নয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে।
রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন এমন ধরনের কাজের উদ্যোগ কে আমি সাধুবাদ জানায়।বিভাগীয় দফতরের আধিকারিকদের বলা হয়েছে সব ধরনের সহযোগিতা করার জন্য।এছাড়া এই কাজের পরিদর্শন করতে আমি খুব শীঘ্রই ওখানে যাব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন