সুন্দরবনের মৎস চাষীদের পাশে কেন্দ্রীয় অন্তস্থলীয় মৎস্য গবেষণা সংস্থা “সিফরি”
নুরসেলিম লস্কর, বাসন্তী : দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের অধিকাংশ ব্লকে বসবাসকারী মানুষের অর্থ উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো মৎস্যচাষ। কিন্তূ প্রত্যেকে বছর আমফান, বুলবুল,ইয়াসের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে সুন্দরবনের সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা সব সময় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এই বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে এবং সেই সঙ্গে সুন্দরবনের পিছিয়ে পড়া দুঃস্থ তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে রবিবার বাসন্তী ব্লকের কুলতলীতে কুলতলী মিলন তীর্থ সোসাইটির ব্যবস্থাপনায় এবং কেন্দ্রীয় অন্তস্তলীয় মৎস্য গবেষণা সংস্থা “সিফরি”র সহায়তায় প্রায় একশো দরিদ্র তপশিলি জাতি ও উপজাতি মহিলা মৎস্য চাষীদের হাতে প্রত্যেককে ৬ কেজি করে চারা মাছ ও ২ বস্তা করে মাছের খাবারও তুলে দেওয়া হয়।
আর এদিন সুন্দরবনের মহিলা মৎসচাষীদের উৎসাহ দিতে এদিনের এই মৎস অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে ‘ সিফরি ‘অধিকর্তা ডঃ বসন্ত কুমার দাস বলেন, “সুন্দরবন এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীবহুল তফশিলি জাতী ও উপজাতি মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে এই প্রকল্প কেন্দ্রীয় অন্তস্থলীয় মৎস্য গবেষণা সংস্থার পক্ষ থেকে শুরু করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার মহিলা মৎস্যজীবীকে মাছ ও মাছের খাদ্য দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনেও আমরা চেষ্টা করব আরো কিছু পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় আনতে এবং এই মাছ চাষের মধ্যে দিয়ে সুন্দরবনের পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলিকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে “। আর দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের সাধারণ মানুষের উন্নয়নের কান্ডারী হয়ে ওঠা কুলতলী মিলনতীর্থ সোসাইটির কর্ণধার বিশিষ্ট সমাজকর্মী তথা সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের প্রাক্তন সদস্য লোকমান মোল্লা বলেন,”দেশের কৃষি প্রধান এলাকাগুলির মধ্যে সুন্দরবন অন্যতম। প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড় অতিবর্ষণ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় কৃষি জমির উপর নির্ভরশীল কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সুন্দরবনে বসবাসকারী তফশিলি জাতী ও উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রায় ৭০ শতাংশ বাসিন্দাদের কাছে ছোট ছোট পুকুর আছে। সেই পুকুরে মহিলারা মাছ চাষ করলে যা আগামী দিনে সুন্দরবনের অর্থনীতিতে নতুন দিশা দেখতে পাবে । সেই সঙ্গে আমাদের মনে রাখতে হবে পরিবারের ‘মা’ সচেতন হলে পরিবার স্বনির্ভর হবে। মিলনতীর্থ সোসাইটি সেই কাজ করার চেষ্টা করছে “। আর এদিনের এই অনুষ্ঠানে সেফরি অধিকর্তা ডক্টর বসন্ত কুমার দাস ও সমাজকর্মী লোকমান মোল্লা সহ উপস্থিত ছিলেন মৎস্য বিজ্ঞানী লিওন, মৎস বিজ্ঞানী শ্রেয়া ভট্টাচার্যের সঙ্গে মহিলা মৎস্যচাষী জোৎস্না রায় মাঝি, অশোকা দাস, রিতা মিদ্দে রা। আর এদিন মাছ পাওয়ার পর মৎসচাষী অশোকা দাস বলেন, আমি এই প্রথম এই ধরনের সাহায্য পেয়েছি। আর এই সাহায্যের জন্য আমি সিফরি ও কুলতলী মিলন তীর্থ সোসাইটি কে ধন্যবাদ জানাই। আর আমরা আজ থেকে চেষ্টা করবো পুকুরে এই মাছ চাষ করে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে এবং আমাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে “।