সুকান্ত কলেজের অধ্যক্ষ কে হেনস্থা! ২ অশিক্ষক কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় FIR !

সুকান্ত কলেজের অধ্যক্ষ কে হেনস্থা! ২ অশিক্ষক কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় FIR !


নুরসেলিম লস্কর, বাসন্তী : প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী, ঝড়খালী, গোসাবার মতো অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া এলাকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা লাভের একমাত্র প্রতিষ্ঠান “সুকান্ত কলেজ “। আর গত বৃহস্পতিবার সেই সুকান্ত কলেজের অধ্যক্ষ কে এবার হেনস্থার অভিযোগ উঠলো ঐ কলেজের দুই অশিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনায় বাসন্তী থানাতে এফআইআর দায়ের করেছেন অধ্যক্ষ ধ্রুব চরণ হোতা। অধ্যক্ষের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে-বারোটায় কলেজে আসেন কলেজের গার্ডম্যান সাইফুদ্দিন খাঁন(বাবলু )। তার পর তিনি অধ্যক্ষের ঘরে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার সময় কলেজে উপস্থিত হওয়ার সময় হিসাবে সকাল দশটার উল্লেখ করেন, তখনই তাকে কলেজের অধ্যক্ষ ধ্রুবচরণ হোতা প্রশ্ন করেন যে, আপনি কি সকাল দশটায় কলেজে এসেছেন? আর অধ্যক্ষের এই প্রশ্ন শুনে গার্ডম্যান সাইফুদ্দিন খাঁন রাগান্বিত ভাবে অধ্যক্ষ কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ থেকে শুরু করে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করতে উদ্ধত হয়। তখন অধ্যক্ষের ঘরে উপস্থিত আরও দুই শিক্ষাকর্মীর হস্তক্ষেপে কিছুটা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হন ঐ কলেজের পিওন তথা গার্ডম্যান সাইফুদ্দি খাঁনের ভাইপো ফিরোজ খাঁন। সেও নাকি এই ঘটনায় অধ্যক্ষ কে সাইফুদ্দিন খাঁনের ন্যায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং শারীরিকভাবে নিগ্রহ করতে যায়। সেই সঙ্গে তারা অধ্যক্ষ কে বলেন, এই কলেজ আমাদের জায়গায়! আর আপনি কিনা আমাদেরকে এই প্রশ্ন করছেন? আমরা কখন কলেজে আসবো? কখন যাবো ? আপনার সাহস তো কম নয়! এবিষয়ে উল্লেখ্য যে, সুকান্ত কলেজ বর্তমানে যেখানে অবস্থিত সেই জায়গায় মালিক ছিলেন ঐ গার্ডম্যান সাইফুদ্দিন খাঁন ও পিওন ফিরোজ খাঁনের পিতা নাসিরুদ্দিন খাঁন। কিন্তূ কলেজ করার জন্য যে জায়গা তাঁরা দেন তার বদলে দুটি চাকরিও নেন তাঁরা। যে চাকরি দুটি এখন করেন সাইফুদ্দিন খাঁন ও ফিরোজ খাঁন।

 

আর এই ঘটনায় আতঙ্কিত ও অপমানিত সুকান্ত কলেজের অধ্যক্ষ ধ্রুব চরণ হোতা ঐ দুই অশিক্ষক কর্মীর বিরুদ্ধে বাসন্তী থানা এফআইআর দায়ের করেন। আর এবিষয়ে সুকান্ত কলেজের অধ্যক্ষ ধ্রুব চরণ হোতা বলেন, ” আমি এই কলেজের দায়িত্ব নিয়েছি ১৮ মাস হল। আমার আগে যত অধ্যক্ষ এই কলেজে এসেছেন সকলকে এভাবেই কলেজ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে, ওরা ভেবেছে আমাকেও এইভাবে কলেজ থেকে বিতাড়িত করবে। কিন্তু আমি বাকিদের মত ঐ রাস্তায় হাঁটতে রাজি নই । এবং ওদের কথা মতো চলতেও রাজি নই। আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো। তার জন্য পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে আমার উচ্চতর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যতদূর পর্যন্ত যেতে হয় আমি যাব। আমি চাই সুন্দরবনের এই দরিদ্র প্রবণ এলাকার শিক্ষার্থীরা যেন এই কলেজ থেকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে  সেই পরিবেশ এবং সেই ব্যবস্থা আগে করার ব্যাবস্থা করবো। আর তা করতে গেলে কলেজে আগে শিক্ষা কর্মী থেকে শুরু করে শিক্ষকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। কারণ যেখানে কলেজের অধ্যক্ষের নিজের নিরাপত্তা নেই সেখানে কিভাবে শিক্ষার্থীদের থেকে শুরু করে মহিলা শিক্ষিকা ও মহিলাকর্মীদের নিরাপত্তা পাবে। এই ঘটনার পর থেকে যা নিয়ে আমি রীতিমতো আশঙ্কিত। তাই আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে আবেদন করছি, কলেজে যারা এমন আচরণ করছে তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। যে শাস্তি দেখার পর দ্বিতীয় দিন থেকে অন্যরাও দুবার ভাববে এই পথের পথিক হওয়ার আগে।

    আর এবিষয়ে সুকান্ত কলেজের টিএমসিপির ছাত্র সংগঠনের সভাপতি সাহিদ আনোয়ার বলেন, ” ঐ সাইফুদ্দিন খাঁন নামের একটি ব্যাক্তির জন্য আমাদের কলেজে বারবার গন্ডগোল গোলযোগ হচ্ছে। আর বৃহস্পতিবারের ঘটনাও ওনার জন্য ঘটে। যার প্রতিবাদ হিসাবে আমরা বিক্ষোভ দেখাতে গেলে প্রিন্সিপাল স্যারের অনুরোধে আমরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করিনি। কিন্তু প্রিন্সিপাল স্যারের এই লড়াইয়ে আমরা স্যারের পাশে সব সময় আছি এবং থাকবো। সেই সঙ্গে আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি এবং অভিযুক্তের শাস্তি দাবী করছি”। আর এই অভিযোগ অস্বীকার করে ঐ দুই অশিক্ষাকর্মী বলেন যে, কলেজের অধ্যক্ষ আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। গত বৃহস্পতিবার কলেজে তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন