বন্ধ স্থলপথ, দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে জল পথে পন্য পরিবহন এখন ভরসা বাংলাদেশের, সুন্দরবনে বেড়েছে বাংলাদেশী জাহাজের আনাগোনা, চিন্তায় স্থানীয় মানুষজন থেকে প্রশাসনের কর্তারা
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ইতিমধ্যেই সড়ক পথে বাংলাদেশের সাথে বানিজ্য স্থগিত রেখেছে ভারত সরকার। ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশ পন্য সামগ্রী আমদানি রপ্তানি করতে পারবে না বলে নির্দেশিকা জারি করেছে দিল্লি। তবে এখনও উন্মুক্ত রয়েছে জলপথ। বাংলাদেশের সাথে ভারতের জলপথ যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম সুন্দরবনের নদী পথ। আন্তর্জাতিক এই জলপথ ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশি পন্যবাহী জাহাজ যাতায়াত করে। গত কয়েকদিনে সেই জাহাজ চলাচল অনেকটা বেড়ে গেছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এই পন্য আমদানি বা রপ্তানির কারনে জাহাজের পরিমান বৃদ্ধির কারনে এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত সুন্দরবনের মানুষজন। পাশাপাশি অতিরিক্ত জাহাজ চলাচলের কারনে নদী বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলেও দাবি প্রশাসনের আধিকারিকদের। এছারাও এই জাহাজ চলাচল বৃদ্ধির কারনে জল দূষণ থেকে শুরু করে জলজ প্রাণীদের মৃত্যু বাস্তুতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলছে বলেও দাবি তাঁদের। ইতিমধ্যেই এই জলপথে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এই পন্য আমদানি বা রপ্তানির মাঝে যাতে কোন ভাবে সুন্দরবন এলাকায় কোনরকম সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা অনুপ্রবেশকারীদের ঢোকাতে না করতে পারে বাংলাদেশ সেদিকে নজর রাখছে পুলিশ ও বিএসএফ। তবে এদেশে বারে বারে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়ায় চিন্তিত এলাকার মানুষজন। বিএসএফের চোখ এড়িয়ে সম্প্রতি বারে বারে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ ঘটেছে এদেশে। এসবের মধ্যে অন্যতম করিডোর হিসেবে সুন্দরবনকে ব্যবহার করেছে তারা। দালালদের হাত ধরে বাংলাদেশের খুলনা, বাখেরহাট সহ একাধিক এলাকা থেকে এদেশে সম্প্রতি অনুপ্রবেশ ঘটেছে এদেশের সুন্দরবন এলাকায়। সুন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশের তৎপরতায় ধরাও পড়েছে অনেকেই। এই ধরনের অনুপ্রবেশ এদেশে না ঘটে, সেদিকে কড়া নজর রাখছেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। পাশাপাশি সুন্দরবনের জলপথ ব্যবহার করে কোন জঙ্গি যাতে এদেশে ঢুকতে না পারে সে বিষয়ে নজর রাখছে পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্তারা।গত ডিসেম্বর মাসে ক্যানিং থেকে তেহেরিক-উল-মুজাহিদিনের সদস্য এক কাশ্মীরি জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছিল বেঙ্গল এসটিএফ। সুন্দরবনের জলপথ ব্যবহার করে বাংলাদেশ হয়ে পাকিস্তানে পালানোর ছক কষেছিল সেই জঙ্গি, এমনটাই দাবি ছিল গোয়েন্দা দফতরের। সেই ঘটনার পর থেকে নজরদারি বেড়েছিল সুন্দরবন এলাকায়। তবে মাঝে কিছুটা নজরদারিতে শিথিলতা দেখা দিলেও পাহেলগাঁওতে পাকিস্তানি জঙ্গি হামলার পর সেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি গুড়িয়ে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে ভারত বিরোধী নানা ধরনের পোস্ট লক্ষ্য করা গিয়েছে। এদিকে সম্প্রতি দিল্লি বাংলাদেশের সাথে স্থলপথে ব্যবসা বন্ধ করায় দু দেশের মধ্যে কিছুটা হলেও দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে খোলা জলপথ দিয়ে যাতে এদেশে অনুপ্রবেশ না ঘটে সেদিকেও কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের উন্মুক্ত বাংলাদেশী সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ। কিন্তু তবুও বিএসএফের নজর এড়িয়ে যাতে বাংলাদেশী পন্যবাহী জাহাজ বা অন্য মাধ্যমে এদেশে অনুপ্রবেশ না হয় সেদিকেও নজর রাখছে উপকূল থানার পুলিশ বাহিনী।