মিডডে মিলে লুচি-ঘুঘনি: স্বাদে বৈচিত্র্য, উপস্থিতিতে সাফল্য ।প্রশান্ত সরকার, বাসন্তী : মিডডে মিল মানেই যেন একঘেয়ে খাবারের তালিকা। কিন্তু সেই চেনা ছকের বাইরে হেঁটে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী ব্লকের সোনাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এদিন বিদ্যালয়ের মিডডে মিলের মেনুতে ছিল গরম গরম লুচি আর সুস্বাদু ঘুঘনি। আর এই স্বাদের নতুনত্বে খুশির জোয়ার ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের মুখে। বাইরে তখন মন মাতানো ঝিরঝিরে বৃষ্টি, আকাশ ঢেকেছে কালো মেঘে। প্রকৃতির এই রোমান্টিক আবহে শিশুদের পাতে লুচি-ঘুঘনি যেন এক অন্যরকম আনন্দের উৎস হয়ে উঠেছে। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী পুজা মণ্ডল বলে, “আজকের খাবার খুব ভালো লেগেছে। লুচি আর ঘুঘনি খেয়ে খুব মজা পেয়েছি।” অনেকেই বলেছে, আজ যেন উৎসবের দিন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন মাইতি বলেন, “আমরা চিরাচরিত খিচুড়ি আর ডাল-তরকারির বাইরে গিয়েও মাঝে মধ্যে বাচ্চাদের জন্য নতুন কিছু দেওয়ার চেষ্টা করি। এতে ওরা যেমন খুশি হয়, তেমনি বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হারও বাড়ে। মিডডে মিলের মান ভালো হলে বাচ্চারা স্কুলমুখী হয়।” বর্তমানে মিডডে মিল নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে—কোথাও খাবারের মান খারাপ, কোথাও যথাযথভাবে রান্না হয় না, আবার কোথাও খাবারের অভাব। এসবের মাঝেই সোনাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় যেন এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ। শুধু লুচি-ঘুঘনি নয়, বরং এই স্কুলে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হয় ডিম, মাছ, এমনকি মাংসও। এই উদ্যোগে শুধু পুষ্টি নয়, বেড়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও ছাত্রদের আগ্রহ। পুষ্টিকর খাবার পেয়ে বাচ্চাদের স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকে, তেমনি শিক্ষাক্ষেত্রেও তারা হয়ে ওঠে মনোযোগী।
সামগ্রিকভাবে বলা যায়, সোনাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ শুধু একটি স্কুলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি এক অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে গোটা জেলার স্কুলগুলির জন্য। মিডডে মিল যে শুধুমাত্র খাদ্য নয়, বরং তা হতে পারে শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার—এই বার্তাই যেন দিয়ে গেল আজকের লুচি-ঘুঘনির দুপুর ।