সোনারপুরের জোড়া-হত্যা মামলায় সাজা ঘোষণা।

সোনারপুরের জোড়া-হত্যা মামলায় সাজা ঘোষণা।

নিজস্ব সংবাদদাতা, সোনারপুর : পাঁচ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটল অবশেষে। ২০২০ সালের ১১ই জুলাইয়ের ভোরে যখন গোটা দেশ করোনা আতঙ্কে থমথমে, ঠিক সেই সময় সোনারপুরে ঘটে এক নারকীয় জোড়া-হত্যা। ওই দিনের ঘটনা আজও আতঙ্ক জাগায় স্থানীয়দের মনে। সেদিন ভোরবেলায় প্রতিবেশী অসীম দাস বাড়ির দরজা খোলা পেয়ে ভেতরে ঢুকতেই স্তব্ধ হয়ে যান। মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন গৃহকর্তা বাসুদেব গাঙ্গুলী ও তাঁর বিবাহিতা কন্যা সুমিতা। দেহজুড়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখে বোঝা যাচ্ছিল, পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে হত্যাকাণ্ড। মুহূর্তে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।

ঘটনার তদন্তভার নেন তৎকালীন সোনারপুর থানার এস.আই. প্রদীপ রায় (বর্তমানে বকুলতলা থানার ওসি)। প্রথম থেকেই সন্দেহের তীর গিয়ে লাগে পরিবারের অন্য দুই সদস্য—সুমিতার স্বামী রমেশ পন্ডিত ও শাশুড়ি অঞ্জলি পন্ডিতের দিকে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় দু’জনকেই। পরে আদালতে দাখিল হয় চার্জশিট। বারুইপুরের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে অতিরিক্ত দায়রা জজ শ্রী কৃষ্ণেন্দু সরকারের এজলাসে শুরু হয় বিচারপর্ব। সরকারি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন রথীন্দ্রনাথ নস্কর। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে মামলার শুনানি। বিচার চলাকালীনই মারা যান অভিযুক্ত অঞ্জলি পন্ডিত। তবে জীবিত থেকে বিচার মুখোমুখি হন রমেশ পন্ডিত।

     আর অবশেষে শনিবার আদালত রায় ঘোষণা করে জানায়—অপরাধী সাব্যস্ত রমেশ পন্ডিতকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। আদালতের এই রায়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠার স্বস্তি মিলেছে নিহত পরিবারের আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছে। আর এই মামলায় নিরলস পরিশ্রমের জন্য বারুইপুর জেলা পুলিশ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে তদন্তকারী অফিসার এস.আই. প্রদীপ রায়, এস.আই. জয়ন্ত দাস (ওসি, ট্রায়াল মনিটরিং সেল) সহ তদন্ত ও বিচারপর্বে যুক্ত সমস্ত পুলিশকর্মীদের প্রতি। আর এলাকার বাসিন্দাদের মতে, “ন্যায় অবশেষে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এতদিনে হলেও আমরা স্বস্তি পেলাম।”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন