সুন্দরবন টিভি নিউজ ডেস্ক : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গবেষণায় যুক্ত হল এক নতুন পালক। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) আয়োজিত রোভার নির্মাণ প্রতিযোগিতায় দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থান অর্জন করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের ২৭৩টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এরাজ্যের এই বিশ্ব বিদ্যালয়ের এই সাফল্য নিঃসন্দেহে এক বিরাট গর্বের বিষয়।প্রসঙ্গত,২০২৩ সালের ৫ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ‘চন্দ্রযান-৩’ অবতরণ করে গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়েছিল ভারত। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার এক বছর পরে ইসরোর পক্ষ থেকে প্রথমবার রোভার নির্মাণের জন্য জাতীয় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় বেঙ্গালুরুতে। এই প্রতিযোগিতাতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মেকাট্রনিক্স ক্লাব’-এর ১০ সদস্যের এক দল মাত্র ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি রোভার তৈরি করে, যা ইসরোর বিজ্ঞানীদের মন কাড়ে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই রোভার কোনও জিপিএস সিস্টেম ছাড়াই শুধু নির্দেশ বা কমান্ড ব্যবস্থায় কাজ করতে সক্ষম ছিল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের অন্যতম সদস্য সায়নকুমার শাহ জানান, “নানা কঠিন পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। এমনকি, প্রতিযোগিতা চলাকালীন ইসরোর বিজ্ঞানীদের নির্দেশে রোভারে নতুন প্রোগ্রামও করতে হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে মূল্যবান।”। আর ‘মেকাট্রনিক্স ক্লাব’-এর সভাপতি দীপঙ্কর সান্যাল জানান, যাদবপুর আরও ভালো ফল করতে পারত। প্রতিযোগিতার এক পরীক্ষায় রোভারকে একটি নির্দিষ্ট বস্তু তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বস্তুর রং ও তার নিচে থাকা কার্পেটের রং এক হওয়ায় রোভার রঙ চিনতে পারেনি। এই প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণেই হয়তো যাদবপুর পঞ্চম স্থান পেয়েছে।
তবে এই সাফল্যকে বড় প্রাপ্তি হিসেবেই দেখছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যাদবপুরের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক অমিতাভ দত্ত বলেন, “ছাত্রদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার ফলেই এই কৃতিত্ব।বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের প্রাক্তনীরাও অর্থসাহায্য করেছেন এই প্রকল্পে। ভবিষ্যতে আরও বড় বড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্য রয়েছে।” আর এই প্রতিযোগিতা থেকে পুরস্কার হিসেবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে একটি ট্রফি এবং ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কার। সেই অর্থ তারা আগামী দিনে কাজে লাগাবে ‘ন্যাশনাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ফর ড্রোন অ্যাপ্লিকেশন রিসার্চ’ (NIDAR 2025)-এ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ড্রোন নির্মাণের ব্যয় বহুল হলেও ইসরোর দেওয়া পুরস্কারের অর্থেই তার একটি বড় অংশ মেটানো যাবে। সবমিলিয়ে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাফল্য শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, গোটা রাজ্যের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত।