নুরসেলিম লস্কর, ক্যানিং : শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং টাউনের রাজার লাট পাড়ায় অবস্থিত চাঁদ মনি বৃদ্ধাশ্রম প্রাঙ্গণ আজ পরিণত হয়েছিল জ্ঞান ও মানবিকতার এক মিলনমেলায়। প্রগ্রেসিভ গ্ৰামীন চিকিৎসক সমিতি (দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা) এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল এক বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির। বিষয়বস্তু ছিল ফার্স্ট এইড, সিপিআর এবং সাপ দংশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও জীবনরক্ষাকারী প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। এদিনের এই অনুষ্ঠানের সূচনাতেই উপস্থিত অতিথিদের সংবর্ধনা জানানো হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যানিংয়ের পশ্চিমের বিধায়ক পরেশ রাম দাস, ক্যানিং-১ পঞ্চায়েতের সমিতির সভাপতি উত্তম দাস, ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার , ক্যানিং মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাম কুমার মণ্ডল সহ এলাকার বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা।
আর এদিনের এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত সেন্ট জন অ্যাম্বুলেন্সের ডিভিশনাল কমান্ডার আসিম নাথ। তাঁর হাত ধরে অংশগ্রহণকারীরা সিপিআর এবং ফার্স্ট এইডের প্রাথমিক ও জরুরি কৌশল শিখে নেন। পাশাপাশি খড়গপুর বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সম্পাদক উপস্থিত থেকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির আলোচনায় অংশ নেন। সেই সঙ্গে এদিন চিকিৎসক সমিতির সম্পাদক আফসার হালদার ও সভাপতি নারায়ণ রায়ের তত্ত্বাবধানে বিশেষ সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সর্প দংশন নিয়ে। ক্যানিং হাসপাতালের সর্প বিশেষজ্ঞ ডাঃ সমরেন্দ্র নাথ মণ্ডল প্রজেক্টরের মাধ্যমে তথ্যভিত্তিক উপস্থাপনা করেন। তাঁর আলোচনায় উঠে আসে গ্রামীণ মানুষের সচেতনতার অভাব এবং সেই ফাঁক পূরণে চিকিৎসকদের ভূমিকা। আর এদিনের দিনভর প্রশিক্ষণ শেষে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজসেবীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্বর্ধিতদের মধ্যে ছিলেন ক্যানিং বায়োকেমিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ লিয়াকত আলি লস্কর, খড়গপুর বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সম্পাদকসহ আরও অনেকে।
আর এদিনের এই শিবির থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিকতার মেলবন্ধন ঘটানো এই শিবিরে অংশগ্রহণকারীরা শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণই করেননি, বরং সংকট মুহূর্তে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকারও করেছেন।আয়োজকদের বিশ্বাস, এ ধরনের উদ্যোগ আগামী দিনে গ্রামীণ সমাজে স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসার ঘটাবে এবং বহু মানুষকে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা পেতে সহায়তা করবে।