নুরসেলিম লস্কর, ক্যানিং : দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের তালদিতে চোর অপবাদে নৃশংস ভাবে খুন হওয়া ঘুটিয়ারী শরীফের হালদার পাড়ার রবীন্দ্র পল্লীর যুবক জামিল শেখের শোকাহত পরিবারের পাশে ‘বঙ্গীয় সংখ্যালঘু পরিষদ’। শনিবার দুপুরে, নিহত জামিলের নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে সরব হতে দেখা গেল ওই সংখ্যালঘু সংগঠনের কর্মীদের। সেই সঙ্গে এদিন বঙ্গীয় সংখ্যালঘু পরিষদের পক্ষ থেকে ২৫ জনের এক প্রতিনিধি দল নিহতের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ান এবং তাঁর আত্মীয় - পরিজনদের শান্তনা দেন। আর এদিন ওই প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়—এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সকল কে অবিলম্বে গ্রেফতার করে উপযুক্ত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি নিহতের পরিবারের ক্ষতিপূরণ স্বরূপ একজনকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার এবং সেই সঙ্গে আর্থিক সহায়তা প্রদানেরও দাবি তোলা হয়।
আর বঙ্গীয় সংখ্যালঘু পরিষদের এদিনের এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন—চিফ পেট্রন মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমী, মিশনারি ফাদার দেবাশীষ আড্ডি, পাস্টর শ্যামল ঘড়ুই, বঙ্গীয় সংখ্যালঘু পরিষদের কার্যকরী সভাপতি শিক্ষক আব্দুর রউফ, সহ-সভাপতি এ.কে.এম. গোলাম মর্তুজা, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. জাহান আলী পুরকাইত, সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, সমাজকর্মী হাফিজুর রহমান, ড. লিয়াকত আলী সহ আরাফ নাইয়া, শিক্ষক আব্দুল্লা মীর, সাংবাদিক হাসিবুর রহমান, সাংবাদিক সাইফুদ্দিন প্রমুখ।
আর এদিন নিহত জামিলের বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রতিনিধি দল সরাসরি পৌঁছে যায় ঘুটিয়ারী পুলিশ ফাঁড়িতে। সেখানে ওসি সুকুমার রুইদাসের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন তারা। আর বৈঠক শেষে প্রতিনিধি দলের তরফে চার দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি পেশও করা হয় এদিন। যার ফলে ওসি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্তরকম সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর । তবে সংগঠনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে জানানো হয়েছে—এবিষয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে যদি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে তারা পরবর্তীতে বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে ডেপুটেশন দেবেন।
আর সব মিলিয়ে আজকের বঙ্গীয় সংখ্যালঘু পরিষদের প্রতিনিধি দলে খ্রিষ্টান ফাদার, পাস্টর, বৌদ্ধ প্রতিনিধি, দলিত-আদিবাসী এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের বহু নেতারা একত্রিত হয়ে এক মঞ্চে যেভাবে বহুমুখী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ উপস্থিতির জানান দিল তা থেকে একটা বিষয় আজ পরিষ্কার তালদির এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ‘বঙ্গীয় সংখ্যালঘু পরিষদ’-এর এই প্রতিবাদী কর্মসূচি শুধু আজকে প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়াল না, বরং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে এক নতুন একতার ছবিও ফুটিয়ে তুলল।



