সুন্দরবন টিভি নিউজ ডেক্স : দশমীর দিন বিকেলের দিকে আচমকা ঝড়ের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির অন্তত দুটি গ্রাম। স্থানীয় সূত্রে খবর, মাত্র এক মিনিটের ঝড়েই শতাধিক ঘরবাড়ি তছনছ হয়ে যায়। অনেক জায়গায় গাছ উপড়ে পড়ে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যায়, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় অন্ধকারে ডুবে যায় গ্রাম। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। এ ঘটনায় একাধিক মানুষ আহত হয়েছেন, যাঁদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে।আবহাওয়া দফতরের আগেই সতর্কবার্তা ছিল যে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ বুধবার রাতেই গভীর নিম্নচাপে রূপ নেবে। সেই সিস্টেম বৃহস্পতিবার অর্থাৎ দশমীর রাত থেকে একাদশীর ভোরের মধ্যে গোপালপুর ও পারাদ্বীপের মাঝ দিয়ে ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাবেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়। দুপুর গড়াতেই তার দাপট বাড়তে থাকে, আর বিকেলের দিকে সন্দেশখালিতে ঝড়-বৃষ্টি আঘাত হানে ভয়াবহভাবে।
স্থানীয়দের বক্তব্য, হঠাৎ ঝড় শুরু হওয়ায় অনেকেই ঘর থেকে বেরোতে পারেননি। কয়েক মিনিটের ঝড়েই কাঁচা বাড়ি গুঁড়িয়ে যায়, টালির চাল উড়ে গিয়ে পড়ে দূরে। সন্ধ্যা নামতেই আবার বৃষ্টি বাড়তে শুরু করে, ফলে রাতের মধ্যে আরও বিপর্যয় হতে পারে বলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এখনও অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন।
অন্যদিকে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত চলবে। কিছু এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কলকাতাতেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দমকা হাওয়ার সঙ্গে হালকা বৃষ্টি নামতে পারে। হঠাৎ আসা এই ঝড়ে সন্দেশখালির দুটি গ্রামের শতাধিক পরিবার কার্যত সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সক্রিয় হয়েছে। তবে গ্রামবাসীর আশঙ্কা, আগামী কয়েকদিন বৃষ্টি চলতে থাকলে বিপর্যস্ত অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।