প্রশান্ত সরকার, ঝড়খালী : দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে সুন্দরবনে বাঘের হানায় মৃত্যুর সংখ্যা। সেই তালিকায় আবারো একজনের নতুন নাম সংযোজন হলো দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ঝড়খালির একেজি ব্লকের বাসিন্দা হরিপদ দাসের (৪৮) । গত ২২ ফেব্রুয়ারী ঝড়খালি থেকে হরিপদ দাস তার দুই সঙ্গীর মধ্যে ভাই দুর্গাপদ দাস ও চন্দন মাহাতোকে সাথে নিয়ে কাঁকড়া ধরতে বেরিয়েছিলেন গাজীখালির জঙ্গলে। কাঁকড়া ধরার সময় গাজীখালির বিপজ্জনক খাঁড়ির মধ্যে প্রবেশ করেন। আর এতেই ঘটে তাদের বিপত্তি। তাদের কাঁকড়া ধরার নির্দিষ্ট দিন শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ২৫ ফেব্রুয়ারী বিকাল চারটা নাগাদ বিপদজনক খাঁড়ি থেকে বেরিয়ে আসছিলেন। সেই সময় হঠাৎ তাদের নৌকার উপর বাঘের আক্রমণ।
বাঘ হরিপদ দাসকে আক্রমণ করেন। তাকে বাঁচাতে তার ভাই দুর্গাপদ দাস ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘের সাথে লড়াই করতে থাকেন । সেই সাথে তাদের আরেকজন সঙ্গী চন্দন সরকার সেও মরিয়া চেষ্টা চালায় হরিপদ দাসকে বাঁচানোর জন্য। কিন্তু বাঘের আক্রমণে ততক্ষনে হরিপদ দাসের মৃত্যু ঘটে। অবশেষে বাঘের মুখ থেকে হরিপদ দাসের দেহটি ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন সঙ্গীরা। দাদার মৃত্যুতে ভাই দুর্গাপদ দাস দিশেহারা হয়ে পরেন। ঘটনাস্থল থেকে প্রতিবেশী চন্দন মাহাতো কোন রকম ভাবে দুজনকে নৌকায় করে ২৬ ফেব্রুয়ারী ভোর রাতে ঝড়খালীতে পৌঁছায়।
এই খবর তাদের পরিবার ও গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে পড়ে। হরিপদ দাসের স্ত্রী বিশাখা দাস ও তার ১৭ বছরের ছেলে আকাশ দাস কান্নায় ভেঙে পরেন। উদ্ধার হওয়া দেহটি পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন ও এই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।