জামাইষষ্ঠীর ইতিহাস জানেন? পারিবারিক বিবাদ থেকে কিভাবে পারিবারিক উৎসবে পরিণত হলো জামাইষষ্ঠী! জেনে নিন

জামাইষষ্ঠীর ইতিহাস জানেন? পারিবারিক বিবাদ থেকে কিভাবে পারিবারিক উৎসবে পরিণত হলো জামাইষষ্ঠী! জেনে নিন



নুরসেলিম লস্কর, সুন্দরবন টিভি :  আজ বাংলা জুড়ে উৎসবের আমেজ। বাংলার ঘরে ঘরে পালিত হচ্ছে জামাইষষ্ঠী। এই জামাইষষ্ঠী বিশেষ ভাবে জামাই ও শাশুড়ির উৎসব। তবে তার সাথে মেয়ে ও নাতি - নাতনিরা সামিল হয়ে বাঙালির বারো মাসের তেরো পার্বণ কে আরও একধাপ বাড়িয়ে দেয়! এই দিনে শাশুড়ি ষষ্ঠী দেবীর কাছে জামাই, মেয়ে ও নাতি - নাতনির মঙ্গল কামনা করেন। জামাইষষ্ঠী বাঙালি সমাজের লোকায়ত উৎসব গুলির মধ্যে অন্যতম একটি উৎসব। যে সংসারে মেয়ে - জামাই, শাশুড়ি আছে, সেই পরিবারের সকল সদস্যরা আজকের দিনটি তে সবাই মিলে জামাইষষ্ঠী উৎসবে মেতে ওঠেন। কিন্তূ এই জামাইষষ্ঠী কিভাবে এবং কেন বাংলায় প্রচলিত হলো! চলুন এবার তা জেনে নেওয়া যাক!  জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা পক্ষের ষষ্ঠী তিথি 'জামাইষষ্ঠী' হিসাবে পালন হয়। এই দিনটি আবার অরণ্য ষষ্ঠী নামেও পরিচিত। আর এই জামাইষষ্ঠীর প্রকৃত ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে আমরা টিম 'সুন্দরবন টিভি' পুরাণের ইতিহাসে ডুব দিয়েছিলাম। যেখানে জামাইষষ্ঠীর ইতিহাস পুরাণ অনুসারে,জামাইষষ্ঠীর ইতিহাস পুরাণ অনুসারে, এক মহিলা তাঁর বাড়িতে রোজ যা রান্না হত তা লুকিয়ে খেয়ে ফেলতেন এবং খাবার না থাকার জন্য দোষ চাপাতেন বেড়ালের উপর। রোজ একটা বেড়াল সব খাবার চুরি করে খেয়ে নেয় বলে দাবি করতেন তিনি। মা ষষ্ঠীর বাহন হল বেড়াল। বিনা কারণে তাঁর বাহনের উপর দোষ চাপানো হচ্ছে দেখে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন মা ষষ্ঠী। ষষ্ঠী দেবীর অভিশাপে ওই মহিলা সন্তানের জন্ম দিলে সেই সন্তানের মৃত্যু হত। তখন ওই মহিলা নিজের ভুল স্বীকার করে মা ষষ্ঠীর আরাধনা করেন। তাঁর পুজোয় প্রীত হয় ষষ্ঠী দেবী তাঁর সন্তানদের প্রাণ ফিরিয়ে দেন। এদিকে ওই মহিলার শাশুড়ি সব জানতে পেরে প্রচণ্ড রেগে গিয়ে তাঁর বাপের বাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দেন। অনেক দিন মেয়েকে না দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে ওই মহিলার বাবা ও মা জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে মেয়ে-জামাইকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। মেয়ে ও জামাই তাঁদের বাড়িতে যান এবং সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়। সেই থেকে জ্যৈষ্ঠ শুক্লা ষষ্ঠী তিথি জামাইষষ্ঠী নামে পরিচিত হয়। এখনকার দিনে জামাইষষ্ঠী হল পরিবারের সবাই মিলে আনন্দ-হুল্লোড় করার দিন। বছরের এই একটা দিন হাসি-ঠাট্টা, খাওয়া-দাওয়ায় মেতে ওঠে সবাই। সকালে মা ষষ্ঠীর কাছে পুজো দিয়ে মেয়ে, জামাই, নাতি, নাতনির জন্য মঙ্গল কামনা করেন শাশুড়ি মা। তারপর দুপুরে নানা খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়। আজকাল অনেকে অবশ্য খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারটা কোনও রেস্তোরাঁয় গিয়ে সেরে নেন। তার সঙ্গে চলে উপহার দেওয়া নেওয়ার পালা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন