নিজের নাবালিকা কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার যাবজ্জীবন সাজা, রায় বারাসাত পক্সো আদালতের।

নিজের নাবালিকা কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার যাবজ্জীবন সাজা, রায় বারাসাত পক্সো আদালতের।

নিজেস্ব প্রতিবেদন | বারাসাত | সুন্দরবন টিভি :
এক ভয়াবহ ও লজ্জাজনক ঘটনা। নিজের নাবালিকা কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করলেন বারাসাত পক্সো আদালতের বিচারক। পাশাপাশি অভিযুক্তকে ৫০,০০০ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে অতিরিক্ত ২ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ভয়াবহ নির্লজ্জ ঘটনাটি সামনে আসে ২০২২ সালে, যখন নিউটাউন থানায় এক নাবালিকার মা তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল, স্ত্রী বাড়িতে না থাকার সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত পিতা নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। নির্যাতিত ঐ নাবালিকার মা জানান, আমি সংসার চালাতে লোকের বাড়িতে কাজ করি, সেদিনও কাজে গিয়েছিলাম। প্রত্যেক দিনের মতো সেদিন যখন কাজ শেষে সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরলাম দেখি আমার মেয়েটি কান্নাকাটি করছে। সন্দেহ হওয়ায় মেয়েকে জিজ্ঞাসা করতেই, চরম সত্য প্রকাশ্যে আসে। এরপরই আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করি।

     আর অভিযোগ পাওয়ার পর নিউটাউন থানার পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে এবং জেরা চলাকালীন অভিযুক্ত নিজেই দোষ স্বীকার করে নেয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বারাসাত পক্সো আদালতের বিচারক দীর্ঘ শুনানি শেষে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই ধরনের অপরাধে কোনও রকম দয়া বা ছাড় নেই। নাবালিকার উপর এমন পাশবিক আচরণ সমাজের ভিত কাঁপিয়ে দেয়, এবং তাই অভিযুক্তকে কঠোরতম সাজা দেওয়া হল। আর এদিনের এই রায় প্রসঙ্গে, সরকারি আইনজীবি গৌতম সরকার বলেন,"নাবালিকা নির্যাতনের মামলায় আমরা দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক সাজা চাইছিলাম। আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এই রায় সমাজের কাছে এক বার্তা দেবে যে শিশু নির্যাতনে কোনও রকম সহানুভূতি দেখানো হবে না।" আর রায় দানের পরে অভিযোগকারিনী ঐ নির্যাতিতার মা বলেন,"আমি আজ বিচার পেলাম। কিন্তু আমার মেয়ের যে ক্ষতি হয়েছে তা কোনওদিন পূরণ হবে না। তবে চাই, আর কোনও মেয়েকে যেন এভাবে লাঞ্ছিত হতে না হয়।" আর এই ঘটনা সামনে আসার পরে সমাজকে আরও একবার ভাবিয়ে তুলছে—নিজের বাড়িতেই যদি একজন শিশু নিরাপদ না থাকে, তাহলে আর কোথায়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে গোটা সমাজ।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন