সমুদ্র পথে অনুপ্রবেশ, বিমার খরচ বাঁচাতে ট্রলারে বাংলাদেশিরা ! গভীর সমুদ্রে ধরা পড়ছে মানব পাচারের গন্ধ !

সমুদ্র পথে অনুপ্রবেশ, বিমার খরচ বাঁচাতে ট্রলারে বাংলাদেশিরা! গভীর সমুদ্রে ধরা পড়ছে মানব পাচারের গন্ধ  !
 
নিজস্ব প্রতিনিধি,কাকদ্বীপ : ফের বাংলাদেশে জেলবন্দি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের সুন্দরবন উপকূলের অন্তত ৩৪ জন মৎস্যজীবী । বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরতে গিয়ে গত রবিবার রাতে রাজ্যের দু’টি ট্রলার ঢুকে পড়ে বাংলাদেশের জলসীমায়। সেখানেই বাংলাদেশের নৌবাহিনী তাঁদের আটক করে পুলিশের হাতে তোলে। বর্তমানে তাঁরা রয়েছেন বাংলাদেশের হেফাজতে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বন্দিদের পরিবারের সদস্যরা। বন্দি মৎস্যজীবীরা সকলেই কাকদ্বীপের কালীনগর, বসন্তপুর ও গণেশপুর এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের পরিবার দাবি করেছে, মৎস্যজীবীরা ভারতীয় এবং তাঁদের কাছে সমস্ত বৈধ নথিপত্র রয়েছে। বসন্তপুরের গৃহবধূ তাপসী দাস বলেন, “আমরা বহু প্রজন্ম ধরে ভারতীয়। আমার স্বামীকে বাংলাদেশি বলে যেন আটক না রাখা হয়।” একই দাবি পূর্ণিমা দাসেরও, যাঁর স্বামী অভিরঞ্জন দাস ‘এফবি মঙ্গলচণ্ডী-৩৮’ নামের ট্রলারে ছিলেন। তবে প্রশাসনের তরফে উঠে আসছে আরও উদ্বেগজনক তথ্য। অভিযোগ, অনেক ভারতীয় ট্রলারেই মূলত বাংলাদেশি মাঝি ও মৎস্যজীবীদের ভাড়া করা হচ্ছে, কারণ তাঁদের ক্ষেত্রে জীবন বিমা বাধ্যতামূলক নয়। ফলে বিমার খরচ বাঁচাতে ট্রলার মালিকেরা ইচ্ছাকৃতভাবে অবৈধ বাংলাদেশিদের কাজে লাগাচ্ছেন। সেই সঙ্গে সন্দেহ দেখা দিয়েছে, এই রুটে মানব পাচার চক্রও সক্রিয় রয়েছে কি না।
                 একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরের যে অংশে ইলিশ বেশি মেলে, তা বর্তমানে বাংলাদেশের জলসীমা। সেই তথ্য ট্রলার মালিকরা জানেন এবং লাভের আশায় সেখানেই যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা মৎস্য দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, “কিছু মৎস্যজীবী সংগঠনের অসৎ নেতাদের জন্য এই পরিস্থিতি। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সংগঠনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” অন্যদিকে, ডিওয়াইএফআই-এর কাকদ্বীপ লোকাল কমিটির সম্পাদক তনুময় হালদার সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, “এই যে বারবার ট্রলার বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে, তার আড়ালে গোপনে মানব পাচার চলছে না তো?” এখন প্রশ্ন একটাই—অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকদের দায়ে জেল খাটা মৎস্যজীবীরা আদৌ ভারতীয় কিনা তা নিশ্চিত করে দ্রুত তাঁদের ফেরত আনার দায়িত্ব প্রশাসনের। সেই সঙ্গে কঠোর নজরদারির দাবি উঠছে ট্রলার মালিক ও মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির নথিপত্রের ওপর।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন