'এটা কি সুন্দরবনের বার্তা ?'—ফলতায় ৭ ফুটের ছায়া দেখে আঁতকে উঠল গ্রামবাসী ।

'এটা কি সুন্দরবনের বার্তা ?'—ফলতায় ৭ ফুটের ছায়া দেখে আঁতকে উঠল গ্রামবাসী ।

 নিজেস্ব প্রতিনিধি, ফলতা : দক্ষিণ ২৪ পরগনার শান্ত জনপদ ফলতা হঠাৎই কেঁপে উঠল এক অজানা আতঙ্কে। গিলেতলা গ্রামের কাঁটাখালি খালে দেখা মিলল এক পূর্ণবয়স্ক কুমিরের। হুগলি নদী থেকে উঠে এসে সেই খালে আশ্রয় নেয় প্রায় ৭ ফুট দীর্ঘ এই বিশাল জলচর প্রাণী। এমন ঘটনায় গোটা এলাকা জুড়ে ছড়ায় চাঞ্চল্য ও উদ্বেগ। সাধারণত এই অঞ্চলে কুমিরের দেখা মেলে না। তাই আচমকা এমন বিপজ্জনক প্রাণীর উপস্থিতি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। প্রথমে কয়েকজন গ্রামবাসী খালের ধারে কুমিরটিকে দেখতে পান। আতঙ্কে তাঁরা চিৎকার করে অন্যান্যদের সতর্ক করেন এবং তৎক্ষণাৎ খবর দেন ফলতা থানায়। আর থানার পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি যোগাযোগ করা হয় বনদফতরের সঙ্গে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বনকর্মীরা। দীর্ঘক্ষণ প্রচেষ্টার পর অবশেষে তাঁরা কুমিরটিকে বিশেষ কৌশলে ধরে নিরাপদে উদ্ধার করেন। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পুলিশ সদস্যরাও।
     স্থানীয়দের অনুমান, জোয়ারের সময় হুগলি নদী থেকে ভেসে এসে খালের ভিতরে ঢুকে পড়ে কুমিরটি। তবে প্রশ্ন উঠছে—এই অঞ্চলে আগে কখনও কুমিরের দেখা না মিললেও হঠাৎ এমন ঘটনা কেন? অনেকেই ভাবছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, নদীর গতিপথ বদল বা জলস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলেই হয়তো কুমিরের মতো প্রাণীরা এখন অভ্যন্তরীণ খালগুলিতে প্রবেশ করছে। বনদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপাতত কুমিরটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং পরে উপযুক্ত আবাসস্থলে মুক্ত করে দেওয়া হবে। গ্রামবাসীরা বনদফতরের এই তৎপরতায় সন্তুষ্ট হলেও তাঁরা এখন আরও বেশি উদ্বিগ্ন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে। আর এই ঘটনার পর নদী ও খালের ধারে নজরদারি আরও জোরদার করার দাবি তুলেছেন গিলেতলা ও আশপাশের এলাকার মানুষজন। তাঁরা বলছেন, “আজ যদি কুমিরটা অন্য দিকে যেত, আর কাউকে আক্রমণ করত, তাহলে বড় বিপদ হয়ে যেত। প্রশাসনের উচিত এখনই নজর দেওয়া।” সাধারণত সুন্দরবনের বিভিন্ন খাড়ি ও নদীতে কুমির দেখা গেলেও, হুগলি নদী হয়ে ফলতার খালে তার প্রবেশ নিঃসন্দেহে অস্বাভাবিক ও চিন্তার বিষয়। এই ঘটনাকে ঘিরে এখন নানামুখী প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ফলতার মানুষের মনে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন