সাংবাদিককে হত্যার চেষ্টা ও হামলার অভিযোগ—নবান্নে চিঠি দিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিল 'সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম।'

সাংবাদিককে হত্যার চেষ্টা ও হামলার অভিযোগ—নবান্নে চিঠি দিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিল 'সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম।'

নুরসেলিম লস্কর, ক্যানিং : গণতন্ত্রের কণ্ঠ রোধ করতে এবার রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের টার্গেটে দৈনিক সংবাদপত্র 'রোজ দিন' এর সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় সরদার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং-২ ব্লকের জীবনতলা থানার আঠারোবাকি গ্রাম-পঞ্চায়েত এলাকার হেদিয়ায় বাসিন্দা তিনি। দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে সাংবাদিক ও সম্পাদক এবং একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক হিসাবে নিযুক্ত আছেন তিনি। কিন্তু একজন সাংবাদিক ও এক সংবাদপত্রের সম্পাদক হওয়া সত্বেও তিনি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। হ্যাঁ ঠিক এরকমই অভিযোগ তুলে কড়া পদক্ষেপের দাবিতে এবার চিঠি গেল নবান্নে। জাতীয় সাংবাদিক সংগঠন 'সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম' এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি মোঃ বাসিরুল হক তার লেখা একটি অভিযোগ পত্রে দৈনিক সংবাদপত্রের সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় সরদারের উপর লাগাতার হামলার অভিযোগ তুলে চিঠি দিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী কে।

    চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে সম্প্রতি মৃত্যুঞ্জয় সরদারের উপরে তার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ভাবে তাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে। কখনো জমি দখল, কখনো পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে দেওয়া আবার তাকে গোপনে হত্যার চেষ্টাও করা হচ্ছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে অবিলম্বে সরকারি ভাবে মৃত্যুঞ্জয় সরদারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ও সেই সঙ্গে তার উপরে ঘটে চলা সমস্ত অন্যায় অত্যাচারের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। আর বিরোধীদের মতো এদিনও ঐ চিঠিতে রাজ্য পুলিশের উপরে ক্ষোভ উগ্ররে দিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে সিআইডি তদন্তের দাবিও করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সংগঠনেরপক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে যদি এবিষয়ে অবিলম্বে রাজ্য প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে তারা আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।

    আর এবিষয়ে দৈনিক সংবাদ পত্র 'রোজ দিন' এর সম্পাদক তথা 'সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম' এর সর্বভারতীয় সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় সরদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,' দীর্ঘ দিন ধরে আমার উপরে ঘটে চলা একের পর এক অন্যায় অত্যাচারের একটায় মূল কারণ,আমাদের মতো যে সব সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যম নিরাপেক্ষ ভাবে সমাজের বর্তমান চিত্রটা তুলে ধরছি, তাদের কণ্ঠ রোধের চেষ্টা! তবে যদি সত্যের পথে থেকে জীবনও দিতে হয় আমার, তাতেও আমি এই রাজনৈতিক দালাল ও এই সমাজ বিরোধীদের কাছে মাথানত করবো না। যা আমি আমার এই দীর্ঘ কুড়ি বছরের সাংবাদিক কেরিয়ারে করিনি আর করবোও না। তবে এই অপরাধীদের কেও একেবারে ছেড়েও দেবো না, দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া তে এবং আমার কলমের জোরে এলড়াই আমি চালিয়ে যাবো।' সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন যে,আমি অবাক হয়ে যায় হাইকোর্টের নির্দেশ থাকার পরেও রাজ্য প্রশাসন কেন আমার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করছে না!তাহলে কি এরাজ্যের সমস্ত কিছু, আগা থেকে গড়া সবই দল দাসে পরিণত হয়েছে? এর উত্তর কিন্তূ দিতে হবে রাজ্য প্রশাসন কে।"

আর মৃত্যুঞ্জয় সরদারের সুরে সুর মিলিয়ে 'সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম' এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি মোঃ বাসিরুল হক জানান, "আমরা অপেক্ষায় আছি আমার চিঠির উত্তরের!তার পর যদি এবিষয়ে আমাদের সন্তুষ্ট জনক উত্তর না আসে তাহলে এরাজ্যের মানুষ দেখবে যে সাংবাদিকদের কলমের জোর কতটা! অনেক হয়েছে আর নয়! দিকে দিকে আমরা দেখছি আমাদের সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় সরদারের মতো নিরাপেক্ষ সাংবাদিকদের উপরে হামলা চালানো হচ্ছে যা গণতন্ত্র বিরোধী। এটা চলতে পরে না। আমরা কিছু দিনের মধ্যে যদি এই চিঠির যথাযথ উত্তর না আসে তাহলে আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সমগ্র দেশ জুড়ে সাংবাদিকরা আন্দোলনে নামবো।" আর সাংবাদিক মহলের  এই হুঁশিয়ারির পরে এখন নজর নবান্নের দিকে—এই চিঠির কী জবাব আসে, সেটাই দেখার বিষয়। সাংবাদিকদের স্বাধীনতা খর্ব করা মানেই তো গণতন্ত্রকে আক্রমণ করা—এবং তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন