নুরসেলিম লস্কর, গোসাবা : গত বুধবার সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে নদী সাঁতরে সরাসরি লোকালয়ের ম্যানগ্রোভের ঝোপে ঢুকে পড়েছিল একটি বাঘ। সেই বাঘের পায়ের ছাপ ঘিরে বুধবার সকাল থেকে হুলস্থূল পড়ে যায় গোসাবা ব্লকের অন্তর্গত লাহিড়িপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্লাসখালি গ্রামে। সেই থেকে যদিও এখনো সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ লাগোয়া ওই গ্রাম ঘিরে রাখা হয়েছে নাইলন জালে। এ দিন সকালে স্থানীয় এক গৃহবধূ দত্ত নদীর পাড়ে বাঘের টাটকা পায়ের ছাপ দেখতে পান। মুহূর্তের মধ্যেই সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে। ভয়ে শিশুদের ঘরের মধ্যেই আটকে রাখেন মায়েরা। বাজারহাট করতে বের হননি লোকজনও।
আর সেই খবর গিয়ে পৌঁচ্ছায় 'সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প' প্রকল্পের বসিরহাট রেঞ্জ অফিসে ও সুন্দরবন কোস্টাল থানায়। খবর পেয়ে বনকর্মীরা নৌকায় করে নাইলনের জাল, লোহার খাঁচা ও ঘুমপাড়ানি বন্দুক নিয়ে হাজির হয়ে যায় গ্লাসখালি গ্রামে।সেই ঘটনা স্থলে পৌঁচ্ছে যান সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জাস্টিন জোন্স। আসেন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সজনেখালি রেঞ্জ ও বিদ্যা রেঞ্জের কর্মীরা ও সুন্দরবন উপকূল থানার পুলিশ। সুন্দর ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্মীরা গ্রামের দিক বরাবর এক কোমর জলে নেমে নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেন জঙ্গলের দিকটি, যাতে কোনও ভাবে বাঘটি সরাসরি লোকালয়ে ঢুকে পড়তে না পারে।গ্রামবাসীদেরও বাড়িতে থাকার জন্য সতর্ক করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। যদিও বিকেলের দিকে নদীতে ভাটা শুরু হলে জল কমতেই ফের বাঘের পায়ের ছাপ অনুসন্ধান করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে বাঘটি আবার কাকমারি জঙ্গলে ফেরত চলে গিয়েছে দত্ত নদী সাঁতরে। বাঘ জঙ্গলে ফেরায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন গ্রামের বাসিন্দারা।
আর এবিষয়ে বাঘ সংরক্ষণ কর্মী অনিল কৃষ্ণ মিস্ত্রি বলেন, ‘অনেক সময় বাঘ আপন খেয়ালে এ ভাবে চলে আসে লোকালয়ের দিকে, আবার নিজেই জঙ্গলে চলে যায়।’ অন্য দিকে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘আমাদের তিনটি রেঞ্জের কর্মীরা গ্রামের দিকের এলাকা ঘিরে পায়ের ছাপ অনুসন্ধান করার পর ভাটার সময় দেখা গিয়েছে বাঘটি কাকমারি জঙ্গলে চলে গিয়েছে।’


