নিজস্ব প্রতিনিধি, কুলপি : দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপিতে ঘটল এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। পরিবারের বকাঝকার জেরে অভিমানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হল একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। শুক্রবার সকালে কুলপি থানা এলাকার একটি গ্রাম থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মেয়েটির অকাল মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬ বছর বয়সি ওই ছাত্রী বৃহস্পতিবার রাতে মোবাইল দেখছিল। সেই সময় পরিবারের সদস্যরা তাকে বকাঝকা করে। এর পর থেকেই সে মনমরা হয়ে পড়ে। ভোররাতে বাড়ির একটি ঘরে দরজা বন্ধ করে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। পরিবারের লোকজন দরজা না খোলায় সন্দেহ হলে প্রতিবেশীদের ডেকে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। তড়িঘড়ি কুলপি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। আর এই খবর পেয়ে কুলপি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় ডায়মন্ড হারবার পুলিশ মর্গে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক বকাঝকা থেকেই এমন মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই কিশোরী। যদিও সঠিক কারণ জানতে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পড়াশোনায় ভালো ছিল ওই ছাত্রী। তার অকল্পনীয় মৃত্যুর ঘটনায় শোকাহত সহপাঠীরা। প্রতিবেশীরাও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে এত সহজে প্রাণ ছেড়ে দিতে পারে মেয়েটি। পরিবারও ভেঙে পড়েছে এই আকস্মিক বিপর্যয়ে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, কিশোর-কিশোরীদের আবেগী মানসিকতা এবং অতিরিক্ত চাপ প্রায়শই তাদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে প্ররোচিত করে। পারিবারিক সমস্যার ক্ষেত্রে সংবেদনশীল আচরণ ও কাউন্সেলিং অত্যন্ত জরুরি। এবিষয়ে পুলিশের এক আধিকারিক জানান, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। আপাতত কোনো সুইসাইড নোট মেলেনি। পরিবারের বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”এই মর্মান্তিক ঘটনায় নতুন করে সামনে এল কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং পারিবারিক সংলাপের গুরুত্বের প্রশ্ন। সমাজকর্মীরা বলছেন, সন্তানদের সঙ্গে সুস্থ যোগাযোগ গড়ে তোলার মধ্য দিয়েই এমন দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।