উৎসবের আগে মানবিক ছোঁয়া সুন্দরবনে।

উৎসবের আগে মানবিক ছোঁয়া সুন্দরবনে।


নুরসেলিম লস্কর, গোসাবা : শারদোৎসবের প্রাক্কালে সুন্দরবনের প্রান্তিক মানুষদের মুখে ফের হাসি ফোটাল সুন্দরবন গোসাবা প্রান্তিক লোকশিল্প কলা কেন্দ্র। গত পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে সমাজসেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসা এই সংগঠন এ বছরও সুন্দরবনের শেষ প্রান্ত লাহীরিপুর অঞ্চলের এনপুরে পৌঁছে দিল নতুন বস্ত্রের উপহার।এদিন এই বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল সমাজের সেই প্রান্তিক মানুষদের পাশে দাঁড়ানো, যারা জীবিকার তাগিদে প্রতিনিয়ত নদী, বন, ও জঙ্গলের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে জীবন হারিয়েছেন। বাঘের আক্রমণ, কুমিরের ছোবল কিংবা সাপের কামড়ে মৃত ব্যক্তিদের পরিবার—বিশেষ করে নারী ও শিশুদের হাতে শারদোৎসবের আগে নতুন পোশাক তুলে দেন সংগঠনের সদস্যরা। উৎসবের আনন্দে অংশগ্রহণে যে বঞ্চনার অনুভূতি অনেক সময় গ্রাস করে তাদের, এই উদ্যোগ যেন সেই অভাব কিছুটা হলেও পূরণ করল।

 আর এদিনের এই মানবিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কবিতা সর্দার, বিশিষ্ট সমাজসেবী সুকুমার ঘোষ, সংস্থার সম্পাদিকা মধুমিতা মণ্ডলসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সকলে একবাক্যে এই কর্মসূচির প্রশংসা করেন এবং বলেন, “শারদোৎসব শুধু শহরের নয়, গ্রামীণ ও প্রান্তিক মানুষের কাছেও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ উৎসবকে আরও অর্থবহ করে তোলে।” আর এদিনের এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে ঐ সংস্থার তরফে জানানো হয়, তাদের একমাত্র লক্ষ্য সমাজের প্রান্তিক মানুষদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাঁদের জীবনযুদ্ধে কিছুটা হলেও সহায়তা করা। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কলকাতার রেড রোডে বনবিবি যাত্রাপালা প্রদর্শনের মাধ্যমে এই সংস্থা ইতিমধ্যেই শিল্প-সংস্কৃতির জগতে আলাদা পরিচিতি লাভ করেছে। এদিনের কর্মসূচি সেই সুনামকে আরও উজ্জ্বল করল।

আর স্থানীয়দের কথায়, এই ছোট্ট সাহায্যই তাদের কাছে অমূল্য। কারণ উৎসবের আগে নতুন পোশাক পাওয়া মানে শুধুই আনন্দ নয়, বরং নিজেদের সমাজের মূলধারার সঙ্গে যুক্ত বলে অনুভব করারও এক বিশেষ উপলক্ষ। আর সব মিলিয়ে শারদোৎসবের মুখে গোসাবার এই মানবিক কর্মসূচি নিঃসন্দেহে সুন্দরবনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা অন্য অনেক সংগঠনকেও প্রেরণা যোগাবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন