শিক্ষক দিবসে “আদর্শ শিক্ষক” সম্মানে ভূষিত ক্যানিংয়ের ডঃ লিয়াকাত আলী লস্কর।

শিক্ষক দিবসে “আদর্শ শিক্ষক” সম্মানে ভূষিত ক্যানিংয়ের ডঃ লিয়াকাত আলী লস্কর।


নুরসেলিম লস্কর, ক্যানিং : শিক্ষক দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরই নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজে শিক্ষকদের অবদানকে স্মরণ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবছর বিশেষ মাত্রা পেল শিয়ালদহের কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়াল হল। শুক্রবার সেখানে আশা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠিত হলো এক বর্ণাঢ্য সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। সমগ্র রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতাধিক শিক্ষক, শিক্ষাবিদ এবং নানা ক্ষেত্রের আলোকবর্তিকারা যোগ দেন এই মহতি অনুষ্ঠানে।
    আর এদিনের এই বিশেষ অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষা ও সমাজগঠনে অসামান্য অবদান রাখা ব্যক্তিত্বদের সামনে তুলে ধরা। বিভিন্ন জেলার নির্বাচিত কয়েকশো শিক্ষক-শিক্ষিকাকে এই দিনে “আদর্শ শিক্ষক” সম্মাননা প্রদান করা হয়। শুধু বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নন, চিকিৎসা, সমাজসেবা এবং গবেষণার মতো ক্ষেত্রেও যারা নিজেদের জ্ঞানকে সমাজকল্যাণের কাজে নিয়োজিত করেছেন, তাঁরাও এদিন এই সম্মানের আসনে আসীন হন। যেমন এই অনুষ্ঠানের বিশেষ মুহূর্তগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের চিকিৎসক ও শিক্ষাবিদ ডঃ লিয়াকাত আলী লস্করকে সম্মাননা প্রদান। তিনি ক্যানিং বায়োকেমিক মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা-শিক্ষার প্রসার ও মানুষের সেবায় নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। চিকিৎসাক্ষেত্রে তাঁর অগ্রণী ভূমিকা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা তাঁকে সমাজের কাছে এক অনন্য শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

     আর এদিন ডঃ লিয়াকাত আলী লস্করের হাতে “আদর্শ শিক্ষক” সম্মাননা তুলে দেন রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী আত্মনানন্দ এবং বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক আব্দুল করিম। তাঁদের উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। সম্মাননা গ্রহণের পর ডঃ লস্কর আবেগভরা কণ্ঠে বলেন— “একজন চিকিৎসক হিসেবে আমি শুধু রোগ সারাই না, রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্যশিক্ষার মাধ্যমে সমাজকে সচেতন করার চেষ্টা করি। শিক্ষকতা মানে কেবল পাঠদান নয়, মানুষ গড়ে তোলা। এই সম্মান আমাকে আগামী দিনে আরও দায়িত্বশীল করে তুলবে।” আর সব মিলিয়ে এদিন কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়াল হলে সকাল থেকেই জমে ওঠে শিক্ষক দিবসের আবহ। মঞ্চে একের পর এক বক্তৃতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সম্মাননা প্রদান পর্বে ভরে ওঠে প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন জেলার শিক্ষকদের হাতে যখন একে একে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়, তখন উপস্থিত দর্শকরা করতালির মাধ্যমে তাঁদের সম্মান জানান।

আর এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তারা একাধিকবার উল্লেখ করেন— শিক্ষা শুধু বইয়ের জ্ঞান সীমাবদ্ধ নয়, বরং মূল্যবোধ গঠন ও সমাজকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। আজকের পরিবর্তিত সামাজিক পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা শুধু শ্রেণিকক্ষে নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তাই ডঃ লিয়াকাত আলী লস্করের মতো ব্যক্তিত্বরা আগামী প্রজন্মের কাছে এক অনুপ্রেরণা।আর শিক্ষক দিবসে এই বিশেষ সম্মান পেয়ে ডঃ লিয়াকাত আলী লস্কর শুধু ক্যানিং নয়, সমগ্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার মানুষের গর্ব বাড়ালেন। তাঁর হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়ার মুহূর্তটি উপস্থিত সকলের মনে এক স্মরণীয় ছাপ রেখে যায়। আশা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই উদ্যোগ আগামী দিনেও চলবে এবং সমাজের প্রকৃত আলোকবর্তিকাদের সামনে তুলে ধরা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন