ভাঙড়ে বিতর্কের ঝড়! বিধায়ক শওকাত মোল্লার মন্তব্যে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া ও রাজনৈতিক মহল।

ভাঙড়ে বিতর্কের ঝড়! বিধায়ক শওকাত মোল্লার মন্তব্যে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া ও রাজনৈতিক মহল।
ভাইরাল ছবি


সুন্দরবন টিভি নিউজ ডেস্ক, ভাঙড় : ভাঙড়ে ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে তৃণমূল বিধায়ক শওকাত মোল্লা। এবাররে ক্যানিং পূর্বের বিধায়কের এক মন্তব্যকে ঘিরে উত্তাল রাজনীতি থেকে সোশ্যাল মিডিয়া। লাগাতার অশান্তির আবহে থাকা ভাঙড়ে এবার তীব্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে তাঁর বক্তব্য ও তার পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হওয়া প্রতিক্রিয়ার জোয়ার।

     সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় একটি AI-নির্মিত ছবি। ছবিটিতে শওকাত মোল্লাকে এক মহিলার সঙ্গে আপত্তিকর ভঙ্গিতে দেখা যায় বলে দাবি ওঠে। মুহূর্তের মধ্যেই সেটি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। বিষয়টি জানাজানি হতেই শুরু হয় জোর চর্চা। আর এই ঘটনায় প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেন শওকাত মোল্লা নিজে। তিনি জানান, “আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যেই কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এই ভুয়ো ছবি বানিয়ে ছড়িয়েছে।” এরপরই তিনি উত্তর কাশীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং প্রশাসনের কাছে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত তদন্তের দাবি জানান।তবে এখানেই শেষ নয়। বিতর্ক আরও বড় আকার নেয় তাঁরই দেওয়া এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। এক সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে শওকাত মোল্লা বলেন,“যারা এসব করছে, তাদের বাড়ির বোনকে আমার সঙ্গে দিলে খুব খুশি হতাম। এ সব AI ছবি দিয়ে কি হবে?” আর এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। ভাঙড় থেকে শুরু করে ক্যানিং, বশিরহাট, এমনকি কলকাতাতেও শওকাত মোল্লার মন্তব্য ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন নেটিজেনরা।
      অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন— একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর মুখে এমন মন্তব্য কতটা শোভন? নারী সমাজকে ছোট করা, অবমাননাকর ও অশালীন বলেও অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। আইএসএফ নেতা ও ভাঙড়ের স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীরাও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁদের দাবি, “এ ধরনের মন্তব্য কোনও সভ্য সমাজে বরদাস্ত করা যায় না। তিনি জননেতা, তাঁর কথায় শালীনতা থাকা উচিত।” অন্যদিকে, শওকাত মোল্লার সমর্থকরা বলছেন, “বিধায়ককে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান করার ষড়যন্ত্র চলছে। তাঁর মন্তব্যকে বিকৃতভাবে ছড়ানো হচ্ছে। মূল বিষয়, অর্থাৎ ভুয়ো AI ছবি তৈরির পেছনে কারা, সেটাই এখন তদন্তের বিষয় হওয়া উচিত।” আর এই ভাইরাল ঘটনার পর ভাঙড়ে রাজনীতিতে শুরু হয়েছে এক নতুন অধ্যায়— নৈতিকতার প্রশ্নে বিতর্ক, প্রযুক্তির অপব্যবহার ও ব্যক্তিগত মর্যাদার লড়াই।সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে হ্যাশট্যাগ #ShaukatMollaControversy ইতিমধ্যেই ট্রেন্ডিংয়ে উঠে এসেছে।

   আর এবিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, “AI প্রযুক্তির অপব্যবহার যেমন ভয়াবহ দৃষ্টান্ত তৈরি করছে, তেমনি জনপ্রতিনিধিদের ভাষা ও মন্তব্যের দায়বদ্ধতাও এই ঘটনায় নতুন করে সামনে এসেছে।” আর বর্তমানে শওকাত মোল্লার মন্তব্য ও ভুয়ো ছবি দুটো নিয়েই তদন্তে নেমেছে প্রশাসন। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। তবে ভাঙড়ের সাধারণ মানুষের মুখে এখন একটাই প্রশ্ন— “AI-র যুগে সত্যি মিথ্যা মেশে সহজেই, কিন্তু জনপ্রতিনিধির মুখের কথা—সেটা তো আর ফিরিয়ে নেওয়া যায় না।”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন