রাজ্য জুড়ে আজ থেকে শুরু হলো টোটোর ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন।
সুন্দরবন টিভি নিউজ ডেক্স : বাংলা জুড়ে টোটো নামে পরিচিত ই-রিকশা নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্য পরিবহন দপ্তরে আজ থেকে শুরু করলো ডিজিটালাইজড টেম্পোরারি টোটো এনরোলমেন্ট নম্বর(TTEN) রেজিস্ট্রেশন। যা চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। পরিবহন দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, টোটোর রেজিস্ট্রেশনের জন্য আজ থেকে শুরু হওয়া TTEN- এর অধীনে রেজিস্ট্রেশন করলে তা একটি নতুন পোর্টাল QR কোর্ড ব্যবহার করে নিবন্ধিত ই- রিক্সা গুলি ট্র্যাক করা হবে, যার ফলে পরিবহন কর্তৃপক্ষ যানবাহনের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে পারবে এবং নতুন অবৈধ টোটো গুলিকে পথে নামা থেকে আটকাতে পারবে !
এবিষয়ে রাজ্যের পরিবহন সচিব সৌমিত্র মোহন বলেছেন, “সরকার রেজিস্ট্রেশন বিহীন এবং অনিরাপদ ই-রিকশার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের স্থানীয় গ্যারেজ দ্বারা নির্মিত অনিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত ই-রিকশাগুলি শনাক্ত করে সেগুলিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এই ই-রিকশার অনেকগুলিই সেন্ট্রাল মোটর ভেহিক্যালস, ১৯৮৯ নির্দেশিকা মেনে চলে না। তাই জেলা কর্তৃপক্ষ সেই ইউনিটগুলিকে সিল করার জন্য নোটিশ জারি করবে যেগুলি নির্ধারিত নির্দেশিকা অনুসরণ করে না। যারা এই নির্দেশিকা মেনে চলবে তাদের শুধু ই-রিক্সা তৈরির অনুমতি থাকবে।”
আর পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্ধারিত প্রোটোটাইপ অনুসরণ করে যে ই-রিকশাগুলি তৈরি করা হয়নি সেগুলিকে রাজ্য এবং জাতীয় মহাসড়কে চলতে দেওয়া হবে না। সেই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন এলাকায় চলাচলকারী ই-রিকশার তালিকা, মালিকদের নাম এবং তাদের রুট নির্ধারণ করবে। অননুমোদিত ই-রিকশার মালিকদের তাদের বর্তমান বাহন প্রতিস্থাপনের জন্য দুই বছর সময় দেওয়া হবে। পরিবহন দপ্তর সূত্রে আরও জানাগিয়েছে, স্থানীয় সংস্থাগুলি দ্বারা বিক্রি করা ই-রিকশাগুলিও ডিলার সংস্থা, ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির অনুমোদন ছাড়া এমভি কর্তৃপক্ষ এবং এইচএসআরপি ফিটমেন্টের অনুমোদন ছাড়া অনুমোদিত হবে না। অনিবন্ধিত ই-রিকশার মালিকদের ছয় মাসের অস্থায়ী অনুমোদন নম্বরের জন্য ১,০০০ টাকা ফি দিতে হবে। পরবর্তীতে রেজিস্ট্রেশন নবায়নের জন্য ১০০ টাকা কম ফি দিতে হবে।
আর বিষয়ে এক পরিবহন কর্তা বলেন, রাজ্যে ১০ লক্ষেরও বেশি ই-রিকশা চলাচল করছে। তিনি আরও বলেন, “যদিও টোটো নামে পরিচিত ই-রিকশাগুলি স্থানীয় পরিবহনে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকার উৎসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রায়শই এমন খবর পাওয়া যায় যে এই ধরণের যানবাহন জাতীয় সড়কে যানজট সৃষ্টি করে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন খাঁড়া করে। আমরা তাদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার এবং তাদের একটি কাঠামোগত কাঠামোর আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছি।”
প্রসঙ্গত, পুজোর সময় যানজট এড়াতে শহরের অনেক বড় বড় রাস্তায় টোটো চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, জেলায় জাতীয় সড়কের উপর টোটো চলাচলের ফলে বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে! বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টোটো চালকরা নিয়ম বহির্ভূতভাবে হাইওয়েতে চলে আসছেন। ছোট ও হালকা গাড়ি হওয়ায় ভারী যানবাহনের সঙ্গে গতি মেলাতে না পেরে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।বিশেষ করে রাতে টোটোতে আলো কম থাকা, লাইসেন্সবিহীন চালক এবং অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাইয়ের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি দিন দিন আরও বেড়েই চলছে! এখন দেখার সরকারের এই টোটো রেজিস্ট্রেশনের পরে পরিবহন ব্যবস্থার আওতায় নথিভুক্ত হওয়া ফলে সেই পরিস্থিতির কতটা বদল আনতে পারে রাজ্য পরিবহন দপ্তর।