নাতনিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ দাদুর বিরুদ্ধে
সুন্দরবন টিভি নিউজ ডেক্স, সোনারপুরঃ দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার সুভাসগ্রাম এলাকা যেন স্তব্ধ। মাত্র পাঁচ বছরের ছোট্ট প্রত্যুষা কর্মকারের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শোক ও ক্ষোভে ফেটে পড়েছে গোটা এলাকা। রবিবার বিকেলে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় শিশুটির দেহ। তাকে দ্রুত সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে — শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে প্রত্যুষাকে। এরপর ধারালো কোনো বস্তু দিয়ে শরীরের একাধিক অংশে আঘাত করা হয়। তবে যৌন নির্যাতনের কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এই ঘটনার পরই তদন্তে নামে সোনারপুর থানার পুলিশ। সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয় শিশুটির দাদু, দিদা ও পরিচারিকাকে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ায় গ্রেফতার করা হয় দাদু প্রণব ভট্টাচার্যকে। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রণববাবু দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন, রয়েছে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই আজ তাঁকে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হবে।
পরিবার ও প্রতিবেশীদের দাবি, প্রণববাবু সাধারণত চুপচাপ স্বভাবের মানুষ হলেও, নাতনির চঞ্চলতা বা দুষ্টুমি তাঁর একেবারেই সহ্য হত না। প্রায়ই বকাঝকা কিংবা মারধর করতেন শিশুটিকে। এমনকি সম্প্রতি কয়েকবার এই নিয়ে মেয়ের সঙ্গেও তর্কে জড়ান তিনি।পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে প্রত্যুষা খাবার খেয়ে ঘুমোচ্ছিল। তখনই সম্ভবত রাগের বশে শ্বাসরোধ করে খুন করেন প্রণববাবু। এরপর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে ঘটনাকে অন্যভাবে দেখানোর চেষ্টা করা হয় বলে অনুমান তদন্তকারীদের।প্রত্যুষার বাবা একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত এবং মা কলকাতার এক ইলেকট্রনিক দোকানে চাকরি করেন। কাজের কারণে দু’জনেই প্রতিদিন সকালে বেরিয়ে যান। সেই সময়েই ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। এক নিরীহ শিশুর এমন নির্মম পরিণতিতে শোকস্তব্ধ সোনারপুর।
প্রতিবেশীরা বলছেন, “এমন মানুষও থাকতে পারে, ভাবতে পারছি না। প্রত্যুষা তো সবার আদরের ছিল।” পুলিশ জানিয়েছে, হত্যার কারণ ও মানসিক অবস্থা নির্ণয়ের জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া হতে পারে।এক মুহূর্তের রাগে অকালে নিভে গেল ছোট্ট এক প্রাণ।প্রত্যুষার নৃশংস মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন একটাই — রক্তের সম্পর্কও কি আজ এতটা নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে?