কুতুব উদ্দিন মোল্লা, জয়নগর : ধোসা, জয়নগর – আলো, ভক্তি আর আনন্দে মেতে উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার অন্তর্গত ধোসা এলাকা। বারুইপুর পুলিশ জেলার ধোসা ফাঁড়ির উদ্যোগে এ বছর অনুষ্ঠিত হলো প্রথম বর্ষের কোজাগরী শ্যামা কালীপুজো। পুজোর আবহে ভক্তি যেমন ছিল, তেমনই ছিল মানবিকতার উষ্ণ ছোঁয়া।
বুধবার সন্ধ্যায় শুরু হয় পুজোর আনুষ্ঠানিকতা। মণ্ডপে প্রবল উৎসাহে ভক্তদের ভিড়, চারপাশে আলো আর শঙ্খধ্বনির মিষ্টি মিশ্রণ। শুধু পূজাই নয়, সঙ্গে ছিল নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লোকসংগীত, নৃত্য পরিবেশনা এবং স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। গ্রামের মানুষজন ও শিশুদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানস্থল হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। কিন্তু এই উৎসবের আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে ছিল এক মানবিক উদ্যোগে। ধোসা ফাঁড়ির পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি, যেখানে এলাকার শতাধিক অসহায় ও দরিদ্র নারী—যাদের অনেকেই জীবন্ত লক্ষ্মী বলে পরিচিত—তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন বস্ত্র। সেই মুহূর্তে মুখে ফুটে ওঠে আনন্দের হাসি, চোখে জল। আশেপাশের মানুষও সেই আবেগ ভাগ করে নেয়।
আর এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিভাস সরদার, জেলা পরিষদের সদস্য তপন কুমার মণ্ডল, সমাজসেবী ইসমাইল মোল্লা, ধোসা ফাঁড়ির এসআই বলরাম মণ্ডল, ও আজাহার উদ্দিন শেখ-সহ একাধিক পুলিশ কর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়াররা। অতিথিরা বলেন, “এই পুজো কেবল ভক্তির উৎসব নয়, এটি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি।” আর পুলিশ কর্মীদের এমন উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়। তারা জানান, “ধোসা ফাঁড়ির অফিসার ও পুলিশরা শুধু আইনশৃঙ্খলার রক্ষকই নন, তাঁরা সমাজের আপনজনও।” পরিশেষে শেষে ধোঁয়া ওঠা প্রসাদ আর ভক্তিমূলক গানের সুরে মিশে গেল গ্রামের মানুষদের হাসি। আলো, ভক্তি ও ভালোবাসায় ভরে উঠল পুরো ধোসা এলাকা। তাই তো এই পুজো শুধু তাদের কাছে দেবীর আরাধনা নয় — এটি ছিল মানবতার পূজা, ভালোবাসার উৎসব, যেখানে পুলিশ, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ একসঙ্গে মিশে গেলেন এক অটুট বন্ধনে।


