সুন্দরবন টিভি নিউজ ডেক্স, পাথরপ্রতিমা : বিজয়ার আনন্দ মুহূর্তেই পরিণত হল শোকের মাতমে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের জি-প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানার দাসপুর উত্তর সুরেন্দ্রগঞ্জ এলাকায় নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কুমিরের আক্রমণে প্রাণ হারালেন এক মৎস্যজীবী। মৃতের নাম শঙ্কর হাতি (৪৫)। রবিবার সকালে জগদ্দল নদী থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজয়া দশমীর পর আত্মীয়রা এসেছিলেন শঙ্করবাবুর বাড়িতে। অভাবী সংসারে অতিথি আপ্যায়নের চিন্তা ঘিরে ধরে তাঁকে। তাই শনিবার সন্ধ্যেয় গিয়েছিলেন মাছ ধরতে—নিজের পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর আশায়। কিন্তু আর ঘরে ফেরা হল না তাঁর। আর স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেদিন সন্ধ্যেয় জগদ্দল নদীতে মাছ ধরার সময় জালে হঠাৎ টান পড়ে। বড় মাছ ধরা পড়েছে ভেবে জাল টানতে নেমেছিলেন হাঁটুজলে। ঠিক সেই মুহূর্তেই আক্রমণ করে এক বিশালাকৃতির কুমির। মুহূর্তের মধ্যেই শঙ্করবাবুকে টেনে নিয়ে যায় নদীর গভীরে। ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন নদীর পাড়ে ছাগল চরাতে আসা এক গৃহবধূ। তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন আশপাশের মৎস্যজীবীরা, কিন্তু কিছুই করার আর সময় মেলেনি। আর সেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানার পুলিশ ও বনদপ্তরের কর্মীরা। লঞ্চ ও নৌকা নিয়ে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। টানা কয়েক ঘণ্টা খোঁজ চালিয়েও শনিবার রাত পর্যন্ত মেলেনি কোনও হদিশ। অবশেষে রবিবার সকালে নদীর জলে ভেসে ওঠে শঙ্কর হাতির নিথর দেহ।
আর নিখোঁজ মৎসজীবীর দেহ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতের পরিবার ও আত্মীয়রা। পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। আর দেহ উদ্ধারের পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় বারবার কুমির দেখা গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আর এই ঘটনার পর থেকেতো জগদ্দল নদীর পাড়ের মৎস্যজীবীরা এখন আতঙ্কে ভুগছেন। এখন দেখার এর পর কি পদক্ষেপ নেয় বনদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন!