সুন্দরবন টিভি নিউজ ডেক্স : আবারও আইনি জটিলতায় জড়ালেন সন্দেশখালির বিতর্কিত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান (Sheikh Shahjahan)। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি জর্জ অগাস্টিন মাসির ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। শুনানির সময় কার্যত ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় শাহজাহানের আইনজীবীকে। এদিন আদালতে শাহজাহানের পক্ষের আইনজীবী রজত সিনহা যুক্তি দেন, একই অভিযোগে সিবিআই (CBI) মাত্র আধ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি এফআইআর দায়ের করেছে— যা আইনের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অবৈধ। তাঁর বক্তব্য, “প্রথম এফআইআরের মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন মেলে। কিন্তু দ্বিতীয় এফআইআরের বিষয়ে প্রায় নয় মাস পেরিয়ে গেলেও কোনও নির্দেশ পাওয়া যায়নি। তাই আমরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি।”
তবে আদালত সেই যুক্তি গ্রহণ করেনি। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত স্পষ্টভাবে জানান, জামিন সংক্রান্ত বিষয় কলকাতা হাইকোর্টের এখতিয়ারভুক্ত, সুপ্রিম কোর্টের নয়। আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানায়, “কলকাতা হাইকোর্ট নিয়মিত শুনানি করছে, কোনও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়নি। তাই আবেদনটি সেখানে দাখিল করতে হবে।” একইসঙ্গে বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, “আর্টিকেল ৩২-এর আওতায় এই মামলা করা হলো কীভাবে?” আর এই পর্যবেক্ষণের পরেই শেখ শাহজাহানের আইনজীবী আদালতের অনুমতি নিয়ে আবেদনটি প্রত্যাহার করে নেন। এর আগে শাহজাহান সুপ্রিম কোর্টে আরেকটি পৃথক আবেদন করেছিলেন — ইডি (ED) আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় ন্যাজাট থানায় দায়ের হওয়া মামলাটি খারিজের জন্য। তবে সেই আবেদনও শীর্ষ আদালত খারিজের সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে রেশন দুর্নীতির মামলায় ইডির টিম হানা দেয় শাহজাহানের সরবেড়িয়া গ্রামের বাড়িতে। অভিযোগ, ইডির আধিকারিকরা সেখানে ঢুকতেই শতাধিক গ্রামবাসী লাঠি, বাঁশ ও লোহার রড নিয়ে হামলা চালায়। ঘটনার পর দীর্ঘ ৫৫ দিন পলাতক থাকার পর অবশেষে গ্রেফতার হন শেখ শাহজাহান। বর্তমানেও সন্দেশখালি কাণ্ড এবং ইডি হামলার মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আর আদালতের এই সিদ্ধান্তে তাঁর আইনি ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে ।


