নিজেস্ব প্রতিনিধি, ভাঙড় : প্রকাশ্য জনসভা থেকে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে সরাসরি হুমকি দিলেন তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। শুধু নওশাদই নন, আইএসএফ কর্মীদেরও ‘মাটিতে পুঁতে ফেলার’ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। দলের ‘গদ্দার’দের ভাঙড়ের মানুষ ‘জামা খুলে নেবে’ বলেও কড়া মন্তব্য করেন শওকত। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁর এমন মন্তব্যে নতুন করে গরম হয়ে উঠেছে ভাঙড়ের রাজনৈতিক পরিবেশ। যদিও বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ আইএসএফ নেতৃত্ব।
![]() |
| বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন - 7479159697 |
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই ভোগালি–১ গ্রাম পঞ্চায়েতে বৈঠক চলাকালীন শওকত মোল্লাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল আইএসএফ। বিধায়ককে লক্ষ্য করে ‘চোর চোর’ স্লোগান দেওয়া হয়। নেতৃত্বে ছিলেন আইএসএফ নেতা কারিমুল ইসলাম। সেই ঘটনার জেরে রোববার বিকেলে কাঁটাডাঙায় দলীয় কর্মিসভা থেকে কারিমুলকে উদ্দেশ করে শওকত বলেন, "ওকে মাটিতে পুঁতে দেব।" তবে, এখানেই থামেননি শওকত। তিনি আরও বলেন, “ওদের বিধায়ক চার বছরে ভাঙড়ে কোনও কাজ করেননি। তাও ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমরা কোনও নোংরামো করিনি। এ বার যদি ওরা আমাদের পিছনে লাগে, তাহলে ভাঙড়ে ওদের বিধায়ক ঢুকতে পারবে না। সব রাস্তা বন্ধ করে দেব।”
আর এদিন শওকতের নিশানায় শুধু আইএসএফ নয়, সেই তালিকায় ছিল ভাঙড়ের প্রাক্তন দুই তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও কাইজার আহমেদকেও। এদিন তাদেরকে নিশানা করেন শওকত মোল্লার অভিযোগ— “কয়েকজন গদ্দার আছে যারা ভাঙড়টা বেচে খেয়েছে। মানুষ ওদের ক্ষমা করবে না। ভাঙড়ের মানুষ ওদের গা থেকে জামা খুলে নেবে।” আর রবিবারের এই কর্মিসভা উপলক্ষ্যে ভাঙড়ের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অটো, টোটো, ম্যাটাডোর ও বাসে করে ব্যাপক ভিড় জমে কাঁটাডাঙায়। সভার জেরে দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকে ৯১ নম্বর বাস রোডে।
অন্যদিকে, শওকতের মন্তব্যে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে আইএসএফও। ভাঙড়ের আইএসএফ নেতা রাইনুর হক বলেন, “ভাঙড়ে জয়লাভ করা শওকত মোল্লার দিবাস্বপ্ন। দম থাকলে আমাদের বিধায়কের পথ আটকে দেখাক। শুধু ভাঙড় নয়, গোটা রাজ্য আমরা স্তব্ধ করে দেব।” আর ভাঙড়ের শ্যাওলা ধরা পুরনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, গদ্দার বিতর্ক, সেই সঙ্গে সরাসরি হুমকি—সব মিলিয়ে ফের অস্থির ভাঙড়ের রাজনৈতিক আবহ। সামনে নির্বাচন, ফলে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল!



