ক্যানিংয়ে হোমগার্ডের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ছয় সদস্যের SIT গঠন পুলিশের, পলাতক SI-এর বিরুদ্ধে খুনের মামলা ।

ক্যানিংয়ে হোমগার্ডের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ছয় সদস্যের SIT গঠন পুলিশের, পলাতক SI-এর বিরুদ্ধে খুনের মামলা।

নিজস্ব প্রতিনিধি, ক্যানিং : ক্যানিং থানার পুলিশ আবাসনে মহিলা হোমগার্ডের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। ঘটনার তদন্তে নেমে পলাতক এক সাব ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি গোটা ঘটনার তদন্তে ছয় সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করা হয়েছে। শনিবার ক্যানিং থানার কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার হয় মহিলা হোমগার্ড গুলজান পারভিন মোল্লা ওরফে রেশমির (২২) ঝুলন্ত দেহ। তাঁকে উদ্ধার করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরই রবিবার মৃতার পরিবার ক্যানিং থানারই সাব ইনস্পেক্টর সায়ন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত সাব ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে। তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্তও। একই সঙ্গে বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) রূপান্তর সেনগুপ্তের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি SIT গঠন করা হয়েছে এই মামলার তদন্তের জন্য। পলাতক অভিযুক্ত সায়ন ভট্টাচার্যের খোঁজে ক্যানিং থানার একটি পুলিশ দল উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে তাঁর গ্রামের বাড়িতে হানা দিলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। অভিযুক্তের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার থেকেই ক্যানিং থানায় কর্তব্যরত সাব ইনস্পেক্টর সায়ন আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান। প্রথমে বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও পরে মৃতার পরিবারের সদস্যরা মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে শনিবার ক্যানিং থানায় আসেন। এরপর মৃতার বোন রুকসানা দিদির কোয়ার্টারে খোঁজ করতে গিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পারভিনকে দেখতে পান। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই জীবনতলা থানার অন্তর্গত উত্তর মৌখালি গ্রাম থেকে মৃতার আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসীরা ক্যানিংয়ে ছুটে আসেন। মৃতার কাকা ছয়েদ মোল্লা অভিযোগ করেন, বিবাহিত সাব ইনস্পেক্টর সায়ন ভট্টাচার্যের সঙ্গে পারভিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে তাঁদের মধ্যে অশান্তি তৈরি হয়, যার জেরেই এই খুন বলে দাবি পরিবারের।

এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। তিনি বলেন, “আমাদের গ্রামের ওই হোমগার্ড মেয়েটির সঙ্গে ক্যানিং থানার এক সাব ইনস্পেক্টরের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য বারুইপুরের পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি।” অন্যদিকে, বিজেপির জয়নগর সাংগঠনিক জেলার নেতা সঞ্জয় নায়েক কড়া ভাষায় অভিযোগ করে বলেন, “থানার কোয়ার্টারও যদি মহিলা পুলিশকর্মীদের জন্য নিরাপদ না হয়, তবে রাজ্যের সাধারণ মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।” ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যানিং জুড়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। তদন্তে কী উঠে আসে, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা এলাকা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন