রাখি পূর্ণিমার পূর্ণ তিথিতে জীবন্ত দেবতার পূজা—তালদিতে ‘বাবা-মা সম্মান দিবস’।

রাখি পূর্ণিমার পূর্ণ তিথিতে জীবন্ত দেবতার পূজা—তালদিতে ‘বাবা-মা সম্মান দিবস’।

নুরসেলিম লস্কর, ক্যানিং : রাখি পূর্ণিমার পূর্ণ তিথি—ভাই-বোনের ভালোবাসা ও বন্ধনের এই বিশেষ দিনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের তালদি মহিলা সমিতি আয়োজন করল এক অনন্য ও আবেগঘন অনুষ্ঠান—‘বাবা-মা সম্মান দিবস’। আর এদিনের এই অভিনব অনুষ্ঠানে আয়োজক দের বার্তা ছিল স্পষ্ট—“বাবা-মা জীবন্ত দেবতা, তাঁদের অবহেলা করে মন্দিরের দেবতা পূজায় ভগবানকে পাওয়া যায় না। জন্মদাতা পিতা-মাতাকেই আগে পূজা ও সেবা করুন।”

     শনিবার দুপুরে তালদির মাঠে আয়োজন হয় এই বিশেষ সম্মাননা অনুষ্ঠানের। প্রায় শতাধিক পরিবারের বাবা-মায়েদের ধান, দুর্বা, পুষ্প দিয়ে বরণ করা হয়। তাঁদের হাতে পরানো হয় রাখি সেই সঙ্গে তাঁদের কে মিষ্টিমুখ করানোর পাশাপাশি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ভরিয়ে দেওয়া হয় মুহূর্তটি। আর তালদির মহিলা সমিতির এদিনের এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বেই ছিল আবেগ ও কৃতজ্ঞতার ছোঁয়া—কেউ চোখ মুছেছেন আনন্দাশ্রুতে, কেউ আবার সন্তানদের আলিঙ্গন করেছেন আশীর্বাদের হাত বাড়িয়ে।

আর এই আবেগঘন অনুষ্ঠান সম্পর্কে তালদি মহিলা সমিতির সদস্যারা জানান, এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো সন্তানদের মনে পিতা-মাতার প্রতি ভালোবাসা ও সেবার মূল্যবোধ আরও দৃঢ় করা। আধুনিক ব্যস্ত জীবনে অনেক সময় বাবা-মায়ের যত্নে অবহেলা দেখা যায়, অথচ তাঁরাই জীবনের প্রথম শিক্ষক ও প্রকৃত আশীর্বাদের উৎস। আর এদিনের এই অনুষ্ঠান কে এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা এই অনন্য আয়োজনকে ক্যানিংয়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে এক ইতিবাচক দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করছেন। তাঁদের মতে, মন্দিরের দেবতার পাশাপাশি জীবন্ত দেবতার—অর্থাৎ বাবা-মায়ের সেবা করাই প্রকৃত ধর্ম এবং রাখি পূর্ণিমার পবিত্র দিনে এই বার্তা গোটা সমাজে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এর চেয়ে সুন্দর সময় আর হতে পারে না।

আর অনুষ্ঠানের শেষে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়—এই ‘বাবা-মা সম্মান দিবস’ প্রতিবছর নিয়মিতভাবে পালন করা হবে, যাতে সমাজে পিতা-মাতার মর্যাদা ও সেবার বার্তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ছড়িয়ে দেওয়া যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন