সুন্দরবন টিভি নিউজ ডেক্স : নদীর পাড়ে বসে সাজানো ঝকঝকে রূপোলি শস্য। হাই পাওয়ারের এলইডি আলোয় চিকচিক করছে ইলিশের গা। কলকাতা থেকে শুরু করে ভিন জেলা ও ভিন রাজ্যের মানুষ এখন ভিড় জমাচ্ছেন ডায়মন্ডহারবারে, শুধু এই রুপোলি ফসলের টানে। যেন বন্দর শহরে চলছে এক অলিখিত হিলসা ট্যুরিজম। তাই হয়তো নিউটাউনের বাসিন্দা প্রতীক চৌধুরী গাড়ি নিয়ে চলে এসেছিলেন ডায়মন্ডহারবারে। সারি দিয়ে বসা বিক্রেতাদের সাজানো মাছ দেখে মুগ্ধ তিনি। দরদাম সেরে ব্যাগভর্তি ইলিশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে প্রতীক বাবু বললেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি, ডায়মন্ডহারবারে ভালো ইলিশ পাওয়া যায়। তাই প্রথমবার এখানে এসেছি।”
শুধু তিনি নন, বীরভূম থেকে গঙ্গাসাগর ঘুরতে আসা পর্যটক দলও ফেরার সময় হিলসা কেনার লোভ সামলাতে পারেননি। আর ক্রেতাদের সুবিধার্থে শুধু শশরীরে গিয়ে ইলিশ কেনা নয়, ক্রেতারা ফোন ও অনলাইনে অর্ডার করলেও পেয়ে যাচ্ছে এই মাছ। কলকাতা, ধানবাদ, বর্ধমান, সুন্দরবন –এর মতো জায়গা থেকেও ভিড় জমছে এখানে। ব্যবসায়ী নগেন মিস্ত্রী জানান, বড় মাছের চাহিদা সবসময়ই বেশি। তবে অনেকে ছোট ও বড়—দু’ধরনের মাছই কিনছেন। তিনি আরও বলেন, “বিকেলের পর থেকেই নদীর ধারে প্রচুর ভিড় হয়। মাঝেমধ্যে গাড়ি চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।” তবে দাম যে খুব কম, এমনটা একেবারেই নয়। প্রায় দেড় কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি পিছু ১৮০০ টাকায়। আর ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ মিলছে প্রায় হাজার টাকা কেজি। তবুও কেন এত ভিড়?
ক্রেতাদের মতে, কলকাতার বাজারে অনেক ঘুরপথ পেরিয়ে আসে মাছ। কিন্তু ডায়মন্ডহারবারে সরাসরি সমুদ্র থেকে ওঠা টাটকা মাছ পাওয়া যায়। এটাই প্রধান আকর্ষণ। তাই তো এই মরশুমে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে নদীর পাড় ও সংলগ্ন নগেন্দ্রবাজার। আড়ত থেকে ক্রেটভর্তি হিলসা এসে পৌঁছায় খুচরো দোকানে। যদিও সঙ্গে রুই, কাতলা বা অন্য মাছও থাকে, কিন্তু পর্যটক ও ক্রেতাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকে শুধু একটি নামেই—ইলিশ। কারণ, জলের রুপোলি শস্য বলতে যে মাছটির কথা মনে পড়ে, তা আর কিছু নয়, বাংলার চিরচেনা হিলসা।