নিজেস্ব প্রতিনিধি, কাকদ্বীপ : আন্তর্জাতিক জলসীমায় মাছ ধরতে গিয়ে ফের বিপাকে ভারতীয় মৎস্যজীবীরা। বৃহস্পতিবার গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর হাতে আটক হল নয়জন ভারতীয় মৎস্যজীবী-সহ একটি ট্রলার। জানা গিয়েছে, ওই ট্রলারটির নাম এফবি এনি (FBNI)। জানাগিয়েছে ঐ মৎসজীবিদের বাগেরহাট আদালতে পাঠানো হবে বলে । আর এবিষয়ে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, তাঁরা আন্তর্জাতিক জলসীমায় মাছ ধরছিলেন। ঠিক তখনই বাংলাদেশের নৌবাহিনীর টহলদার জাহাজ এসে তাঁদের ট্রলারটিকে ঘিরে ফেলে এবং ধাওয়া করে ধরে নিয়ে যায়। তাঁদের দাবি, এইভাবে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে ভারতীয় নাগরিকদের আটক করা একেবারেই বেআইনি। অন্যদিকে বাংলাদেশের দাবি, ট্রলারটি ফেয়ারওয়ে বয়া সংলগ্ন গভীর সাগরে ঢুকে পড়েছিল, যা বাংলাদেশের জলসীমার অন্তর্গত। নিয়ম মেনেই টহলরত নৌবাহিনীর আধিকারিকরা অভিযান চালিয়ে ট্রলারটি আটক করেন। আর মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রে খবর, আটক ট্রলারটিতে প্রায় দেড় মেট্রিক টন (১৫০০ কেজি) টুনা ফিশ ছিল, যা পরে বাংলাদেশে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ক্ষোভ বাড়ছে ভারতীয় মৎস্যজীবী মহলে। কারণ,এই প্রথম নয়, গত কয়েক মাসে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। ১৭ অক্টোবর একটি ভারতীয় ট্রলার আটক করেছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনী। তার আগে জুলাই মাসে দুটি ও অগাস্ট মাসে আরও একটি ট্রলার ধরা পড়েছিল। ফলে উপকূলবর্তী মৎস্যজীবীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ দুই-ই বাড়ছে। আর এবিষয়ে ভারতীয় মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির দাবি, বারবার আন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ট্রলার বাজেয়াপ্ত করা তাঁদের জীবিকার ওপর সরাসরি আঘাত। উপকূলবর্তী গ্রামগুলিতে এখন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। অনেকেই সমুদ্রে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
 আর এবিষয়ে ভারতীয় এক মৎস্যজীবী বলেন, “আমরা নিয়ম মেনে কাজ করি। কিন্তু বারবার বাংলাদেশ নৌবাহিনী আমাদের লোক ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা পথে বসব।” আর এই ঘটনায় ভারতের উপকূলরক্ষী বাহিনী ও পররাষ্ট্র দফতরও নজর রাখছে বলে সূত্রের খবর। মৎস্যজীবী মহলের প্রশ্ন, “আন্তর্জাতিক জলসীমা স্পষ্ট থাকা সত্ত্বেও কেন এমন সংঘাত? দুই দেশের প্রশাসন কবে কার্যকর সমাধান দেবে?” তবে, এই ঘটনায় আবারও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের সমুদ্রসীমা নিয়ে উত্তেজনা সামনে চলে আসলো! এখন দেখার এই সমস্যা গুলির সমাধান কবে দুই দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের কূটনৈতিক পদক্ষেপে সমাধান হয় কি না !


